নোয়াখালী হাতিয়ায় বিএনপি কর্মীদের উপর পুনরায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে- সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো: রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পয়েল (২৫) সবাই তমরদ্দি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আঠারোবেকী গ্রামের বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তানভির হায়দার তান্নার কর্মী-সমর্থক বলে জানা গেছে।
হাসপাতালে আহতদের আনা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। রক্তাক্ত নেতাকর্মীদের আর্তনাদে চারপাশ ভারী হয়ে যায়।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার শিহাব উদ্দিন জানান, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়ার চিহ্ন রয়েছে। অনেকের আঘাত শরীরের ভিতরে পর্যন্ত চলে গেছে। আবার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। আশঙ্কাজনক চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাহিরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারে কয়েকজন বিএনপি কর্মী চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় উত্তর দিক থেকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসা একদল অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে অনেককে আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভির হায়দার তান্না জানান, গত মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে যাওয়ার পথেও তাদের উপর হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনায় ২৫ জন আহত হয়েছিল এবং দু’টি মামলা করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি।
তিনি অভিযোগ করেন, এই হামলার পেছনে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোকজন জড়িত।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আলমগীর কবির জানান, হামলাকারীদের সাথে তার কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিল না। তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়।
হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম জানান, বিএনপি নেতা তানভির ও আলমগীর গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের জের ধরে এই সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আগের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে করা ঈদ পূর্ণমিলনীতে আসার পথে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে ২৫ জন আহত হয়। এই ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে।