মোগল সিংহাসনের দুর্ভাগা প্রার্থীদের একজন ছিলেন শাহ সুজা। সিংহাসন দখলের লড়াইয়ে ভাইদের রক্তাক্ত দ্বন্দ্বে পরাজিত হন তিনি। বাংলার সুবেদার, প্রভাবশালী এই শাসক যেন হঠাৎ পরিণত হন এক শরণার্থীতে, জীবন বাঁচাতে যাঁকে পালাতে হয়েছে। পলায়ন পথের গন্তব্য ছিল আরাকানের রাজধানী ম্রোহং। সুজার এই ম্রোহং যাত্রার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম।
সুজার আরাকান যাত্রা নিয়ে কিছু বিবরণ পাওয়া যায় ‘গেরিট ফন ফুরবুর্গ’ (Gerrit van Voorburg) নামের এক ব্যক্তির লেখা তিনটি চিঠিতে। আরাকানের ম্রোহংয়ে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ‘চিফ ফ্যাক্টর’ বা প্রধান বণিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। তখন ইন্দোনেশিয়ায় (বাটাভিয়া) অবস্থিত কোম্পানির সদর দপ্তরে ফুরবুর্গ তাঁর এসব চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৬৬০ সালের ৩ জুন আরাকানরাজের পাঠানো নৌবহরে ‘দেয়াং’ বন্দর এলাকায় পৌঁছান শাহ সুজা। দেয়াং এলাকাটি অবস্থিত চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে।
মনে রাখা ভালো, তখন দেয়াং তো বটেই, ফেনী নদীর সীমানা পর্যন্ত ছিল আরাকান রাজ্যের অন্তর্গত। ঐতিহাসিকেরা উল্লেখ করেছেন, এই সময়টাতে দেয়াং, চক্রশালা ও পেনুয়া—এই তিনটি বিভাগে বিভক্ত ছিল চট্টগ্রাম।