চলতি মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভেঙে যায়। এই বৃষ্টির কারণে মারাত্মক বন্যা ও বিপর্যয় তৈরি হয়। একটি বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ অনুসারে, এ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি মানুষের জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর সাথে সম্পর্কিত।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন উদ্যোগের অধীনে ২১ জন বিজ্ঞানী ও গবেষকের একটি দল আবিষ্কার করেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে ১০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটেছে যা সাধারণত এল নিনোর বছরে ঘটে না।

১৪ ও ১৫ এপ্রিলে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রেকর্ড অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা ৭৫ বছরে মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মরুর শহর হিসেবে পরিচিত দুবাইতে টানা কয়েক মাস বৃষ্টি না হওয়াই যেখানে স্বাভাবিক ঘটনা। সেই শহরেই দেড় বছরের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে।

গবেষণা দলটি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, রেকর্ড বৃষ্টিপাতের পিছনে প্রধান কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়া। বায়ুমণ্ডল স্বাভাবিকের থেকে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ হলে তা ৮.৪ শতাংশ বেশি বেশি আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে যা ভারী বৃষ্টিপাতের অন্যতম প্রধান কারণ।

জুরিখের বায়ুমণ্ডল ও জলবায়ু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সোনিয়া সেনেভিরত্নে জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের মতো শুষ্ক অঞ্চলগুলোও বৃষ্টিপাতের উল্লেখযোগ্য প্রভাবের মুখোমুখি হতে পারে। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় এটি আরো গুরুতর হয়ে উঠছে।

সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ রিসার্চের মনসুর আলমাজরুই উল্লেখ করেছেন, দুটি দেশে ভারী বৃষ্টিপাত পৃথক শক্তিশালী ঝড় থেকে এসেছে। সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঝড়ের মাত্রা আরো তীব্র হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

লন্ডনের গ্রান্থাম ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিজ্ঞানের সিনিয়র প্রভাষক ফ্রেডেরিক অটো বলেছেন, গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে যে এই ঝড়গুলো আরো ঘন ঘন ঘটছে। তার মতে, এল নিনো এপ্রিলের বৃষ্টিতেও অবদান রেখেছে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের গতি কমানোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা বৈশ্বিক উষ্ণতার মাত্রাকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেই সীমাবদ্ধ করতে নতুন জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পগুলো বন্ধ করার ওপর জোর দিচ্ছে। কিন্তু জলবায়ু নিয়ে আলোচনার প্রায় ছয় মাস পরেও দেশগুলো এখনো নতুন তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র খুলছে।

ফ্রেডেরিক অটো সতর্ক করে জানিয়েছেন, ক্রমাগত জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার ঘটনা আরো বৃদ্ধি পাবে।



বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews