সে যেন ঠিক একটা রূপকথার বিয়ে। প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে লেডি ডায়ানার এনগেজমেন্ট থেকে বিয়ে- পুরো পর্বটা নিয়েই বিশ্ব জুড়ে ছিল তুমুল আগ্রহ, কৌতুহল, আলোচনা।তার আগে প্রেমপর্বটা নিয়েও কম খবরাখবর হয়নি। কিন্তু ডায়ানাকে বিয়ের আগের রাতে নাকি বিষাদের অশ্রু নেমে এসেছিল চার্লসের চোখে।



রয়্যাল ফ্যামিলির জীবনীকার পেনি জুনোর-এর সাম্প্রতিক এক বই তেমনই দাবি করেছে। ‘দ্য ডাচেস: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ বইটিতে এমন কিছু ঘটনার উল্লেখ রয়েছে, যা থেকে বিষাদমাখা এক অজানা সত্যি সামনে আসছে। ডায়ানাকে বিয়ের আগের রাতে নাকি জানালায় দাঁড়িয়ে কেঁদেছিলেন তরুণ যুবরাজ চার্লস। বর্ণাঢ্য সেই আয়োজনের ভেতরে কীসের বিষাদ লুকিয়ে ছিল? কেন কেঁদেছিলেন তিনি?



বইটির দাবি, এই কান্না ও বিষাদের সঙ্গে জড়িয়ে যুবরাজ চার্লসের সেই সময়ের প্রাক্তন প্রেমিকা তথা বর্তমান স্ত্রী ক্যামিলা পার্কার। রয়্যাল লেখিকা তার বইতে লিখেছেন, ১৯৭১-এ চার্লস ও ক্যামিলার দেখা হয়। লুসিয়া স্যান্টা ক্রুজ নামে এক বন্ধুর মাধ্যমে তাদের পরিচয়।  খুব তাড়াতাড়িই তাঁর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথার সঙ্গে মাঝে মধ্যেই তারা দেখা করতেন। দীর্ঘদিন চিঠি চালাচালিও হয়েছিল।



দু’বছর ধরে চার্লস ও ক্যামিলার গভীর প্রেম থাকা সত্ত্বেও ডায়ানাকে বিয়ে করেন প্রিন্স চার্লস। অন্যদিকে, ক্যামিলাও বিয়ে করে ফেলেন তার প্রাক্তন প্রেমিককে।



কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা?



ডাচ পরিবারে ক্যামিলার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছ থেকেই নাকি ধাপে ধাপে কিছু ঘটনার কথা জানতে পেরেছিলেন লেখিকা পেনি জুনোর।



বইতে তিনি লিখেছেন, ক্যামিলা-চার্লসের প্রেম চলাকালীনই রয়্যাল নেভির প্রশিক্ষণ নিতে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে চলে যেতে হয় চার্লসকে। আর সেই সময়েই ঘটে সর্বনাশ। চার্লসের অবর্তমানে ফের ক্যামিলা তার প্রাক্তন প্রেমিক মেজর অ্যান্ড্রু পার্কারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। রাজপরিবারের নিগড় নিয়ম ও রক্ষণশীলতার কথা জানতে পেরেই নাকি প্রিন্স চার্লসকে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ক্যামিলা। তাই অ্যান্ড্রুকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে চার্লসকে চিঠিও লেখেন তিনি। পাল্টা চিঠিতে চার্লস অ্যান্ড্রুকে বিয়ে না করার জন্য অনুরোধও করেছিলেন ক্যামিলাকে।



পেনি জুনোর লিখেছেন, ক্যামিলাকে বোঝানো হয়েছিল, বাকিংহাম প্যালেসের যুবরাজ তথা লর্ড মাউন্টব্যাটনের ভাইপোকে বিয়ে করার মতো অভিজাত পরিবারের মেয়ে তিনি নন। প্রশ্ন উঠতে পারে তার কুমারিত্ব নিয়েও!



সব মিলিয়ে প্রিন্স চার্লসকে নিজের জীবন থেকে সরিয়ে ফেলাই সে সময় ঠিক মনে করেছিলেন ক্যামিলা। বহু নারীর সঙ্গে অভ্যস্ত মেজর অ্যান্ড্রু পার্কার বোলসকে সব জেনেশুনেও বিয়ে করে ফেলেন ক্যামিলা। যদিও সেই বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।



এর পর কেটে গেছে ন’বছর। রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ স্পেন্সর পরিবারের ডাকাবুকো সুন্দরী মেয়ে ডায়ানার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় চার্লসের। ১৯৮১-র ২৯ জুলাই ডায়ানাকে বিয়ে করেন যুবরাজ। কিন্তু ক্যামিলাকে ভুলতে পারেননি। সেই স্মৃতিবেদনার ভারাক্রান্ত হয়েই নাকি চোখে জল এসেছিল বিয়ের আগের রাতে।



বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন ক্যামিলাও। ক্যামিলার উপস্থিতি নাকি ডায়ানার অস্বস্তি বাড়িয়েছিল। ক্যামিলার ছায়া নাকি তাড়া করেছিল হানিমুনেও। ডায়ানার এক জীবনীকারও লিখেছেন, ক্যামিলার বিষয় নিয়ে অবসেসড ছিলেন ডায়ানা। চার্লসকে বিশ্বাস করতে পারতেন না।  চার্লস-ডায়ানার সম্পর্ক ভাঙার পেছনেও ডায়ানার এই মনোভাব বড় ভূমিকা নিয়েছিল বলে মনে করেন ‘দ্য ডাচেস: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’র লেখিকা।



১৯৯৬ সালে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় ডায়ানা ও চার্লসের। পরের বছর পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ডায়ানার। প্রাক্তন স্ত্রীর মৃত্যুর পর অবশ্য প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যামিলার কাছেই ফিরে যান প্রিন্স চার্লস। প্রায় ন’বছর পর ক্যামিলা পার্কারকে বিয়ে করেন প্রিন্স অব ওয়েলস।



তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার




Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews