ইসরায়েলকে দেওয়া জাতিরাষ্ট্রের স্বীকৃতি স্থগিত করেছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন পিএলও। ৯০ দশকে স্বাক্ষরিত অসলো চুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল পরস্পরকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিটি পর্যালোচনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন (পিএলও)’র এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।


ক্রমেই সংঘটিত হচ্ছে ইসরায়েলের জাতিমুক্তি আন্দোলন

১৯৯০ এর দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন অসলো চুক্তি হয়। ১৯৯৩ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দল পিএলও প্রথমবারের মতো পরস্পরকে স্বীকৃতি দেয়। চুক্তিতে গাজা উপত্যকাকে পশ্চিম তীর থেকে পৃথক করার সুপারিশ করা হয়। তবে সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পর এটি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএলও। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা নাবিল শাত সে সময় জানান, ওই চুক্তি বাতিলের বিষয়ে আলোচনা করবে পিএলও’র কেন্দ্রীয় কাউন্সিল।

মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র

১৪ ও ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকের সূত্রে আল জাজিরা জানায়, পিএলও’র দুই দিনের বৈঠকের পর ফিলিস্তিনের সিদ্ধান্ত নির্ধারণকারী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এর পক্ষ থেকে একটি চূড়ান্ত বিবৃতি পড়ে শোনানো হয়। বিবৃতিতে সব ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বন্ধের সিদ্ধান্ত নবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি যারা জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেবে সেখানে দূতাবাস সরাবে তাদের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয় আরব রাষ্ট্রগুলোকে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দিনের বৈঠকের শুরুতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এখন আমরা ট্রাম্পকে ‘না’ বলব। আমরা তার পরিকল্পনা গ্রহণ করব না।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ‘চূড়ান্ত চুক্তি’তে পৌঁছানোর যে অঙ্গীকার করেছেন তার প্রসঙ্গ টেনে আব্বাস বলেন, “আমরা যাকে ‘শতাব্দীর চুক্তি’ বলে ডাকছি সেটি আসলে শতাব্দীর চপেটাঘাত।”

অসলো চুক্তির ফাইল ছবি

১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৯৯৫ সালে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নামে অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অসলো চুক্তির মধ্য দিয়ে পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ এলাকায় ফিলিস্তিনি অর্থনীতি, বেসামরিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ পেয়েছিল ইসরায়েল। ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিতর্কিত নিরাপত্তা সহযোগিতার দুয়ার খুলেছিল। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানায়, ৭০ বছরেরও বেশি পুরনো সংঘাতের একটাই সমাধান, তাহলো পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। তবে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কেবল ইসরায়েলি দখলদারিত্বই জোরদার হয়েছে। ওই ধরনের কোনও সমাধানে পৌঁছানোটা ফিলিস্তিনিদের জন্য জটিল হয়ে পড়ে। ইসরায়েলি সেনাদের কড়া পাহারায় বর্তমানে ৬ লাখ থেকে সাড়ে ৭ লাখ ইসরায়েলি নাগরিক অধিকৃত ফিলিস্তিনি এলাকাগুলোতে বসবাস করছে। ইসরায়েলের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশই এখানে আছে। অধিকৃত এলাকাগুলোতে থাকতে ইসরায়েল সরকার তাদের নাগরিকদেরকে উৎসাহ ও প্রণোদনা দিয়ে থাকে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews