২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি নেমে আসে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশে এবং শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতির ধারা থেকে বেরিয়ে উল্টো মূল্যহ্রাসের চক্রে ঢুকেছে, অর্থাৎ ডিফ্লেশন হচ্ছে দেশটিতে (মাইনাস ২ শতাংশ)। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো ৯ শতাংশের ওপরে, যদিও সম্প্রতি কিছুটা কমেছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এত দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা।
শ্রীলঙ্কার ও পাকিস্তান সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল। শ্রীলঙ্কার ছিল ঋণ সংকট ও সে কারণে সৃষ্ট বিদেশি মুদ্রার সংকট। পাকিস্তানের বেলায় ছিল বৈদেশিক ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতা- যে কারণে পাকিস্তান উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক স্থবিরতার মুখে পড়েছিল। বাংলাদেশ সে ধরনের সংকটে পড়েনি, যদিও আলোচনা ছিল, বাংলাদেশের অবস্তা শ্রীলঙ্কার মতো হবে কি না। দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতির মূল কারণ অব্যবস্থাপনা।
বিষয়টি হলো, করোনার প্রথম ধাক্কার পর ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই মূল্যস্ফীতির হার সারা বিশ্বে বাড়তে শুরু করে। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হয়। ইউরোপ ও আমেরিকায় মূল্যস্ফীতির হার ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যায়। তখন থেকে বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। কিন্তু উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ বা ইউরোপ–আমেরিকা মূল্যস্ফীতির হার কমিয়ে আনতে পারলেও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো কমছে না।