কক্সবাজারের টেকনাফে গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-বিজিবির নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী। এ সময় নারী ও শিশুসহ ৮৪ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেকনাফ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, গোপন সংবাদে টেকনাফ বিজিবির সদস্যরা জানতে পারে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া এলাকার গহীন পাহাড়ে একটি পাচারকারী চক্র মালয়েশিয়া কিংবা থাইল্যান্ডে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগীকে আটকে রেখেছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির সদস্যরা প্রথমে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে বাহারছড়া পাহাড়ি এলাকা থেকে একজন পাচারকারীকে আটক এবং চারজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর ভিকটিমদের কাছ থেকে মানব পাচারকারীদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়।

এই তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় বিজিবি ও র‌্যাব যৌথ অভিযানের পরিকল্পনা নেয়।

বিজিবি অধিনায়ক জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী বিজিবি ও র‌্যাবের যৌথ বাহিনীর সদস্যরা রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া এলাকা থেকে রাজাছড়া পাহাড়ের উপরে রুদ্ধশ্বাস চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের প্রথম ধাপে ১৪ জন এবং পার্শ্ববর্তী আরেকটি পাহাড় থেকে ১৩ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। এরপরই, রাজাছড়া এলাকার অন্য একটি পাহাড়ে অভিযান চালানোর সময় পলায়নরত পাচারকারীরা পাহাড়ের উপর থেকে যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এবং অপহরণকারীরা এ সময় বেশ কিছু পণবন্দীকে পাহাড়ের নিচে ঠেলে দেয়। এসময় ভুক্তভোগীদের জীবন রক্ষার্থে পাল্টা গুলি না ছুড়ে যৌথ বাহিনী পাহাড়াটিকে ঘিরে রেখে খাড়া ঢাল বেয়ে সশস্ত্র পাচারকারীদের ধরতে পাহাড়ের চূড়ায় কৌশলে অভিযান চালায়।

বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা দিনে ও রাতে অভিযান চালিয়ে দু’জন পাচারকারীকে আটক এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান ও একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে। এছাড়াও, তাদের আস্তানা তল্লাশি করে একটি বিদেশী পিস্তল, দু’টি দেশীয় রামদা ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়। এ সময় তিনটি অস্ত্রের চেম্বার থেকে তিন রাউন্ড তাজা গুলি জব্দ করা হয়।

এই অভিযানে যৌথ আভিযানিক দলটি বিভিন্ন পাহাড় ও তার পাদদেশ থেকে ৫১ জন এবং পাহাড়ের চূড়া থেকে আরো ছয়জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। একই দিন দমদমিয়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বড়ইতলি এলাকা থেকে আরো চারজনকে উদ্ধার করা হয়। যৌথ অভিযানে মোট ৮৪ জন ভুক্তভোগীকে পাচারকারীদের কবল থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

তাদেরকে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড কিংবা ইন্দোনেশিয়ায় পাচার করতে পাহাড়ের আস্তানায় পণবন্দী করে রেখেছিল।

গ্রেফতারকৃত তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

আটক তিন পাচারকারী টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন বিজিবির কর্মকর্তারা।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews