দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৭৭৭ জন শিক্ষক টানা ছয় মাস কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এ শিক্ষকরা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের (স্টেপ) শিক্ষক। প্রকল্পটি গত বছরের জুনে শেষ হয়ে যাওয়ার পর সরকার এ শিক্ষকদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে বিলম্ব হওয়ায় গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস এই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। তবে গত জানুয়ারি থেকে তারা আর কোনো বেতন-ভাতা পাননি।

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, প্রকল্প শেষ হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের মৌখিকভাবে কাজ করে যেতে বলা হয়েছে। তারাও গত জুন থেকে ক্লাস নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ছয় মাসের বেতন-ভাতা বাকি হলে গত ডিসেম্বরে ৬ মাসের বকেয়া বেতন পেয়েছিলেন। তা আবার ধারদেনা শোধ করতেই শেষ হয়ে গেছে। তারা বর্তমানে আত্মীয়স্বজনের কাছ থকে ধারদেনা করে চলছেন। এখন দেশের এই দুর্যোগের মধ্যে আর কারও কাছে ধারদেনা চাইতেও পারছেন না। তিনি তার বৃদ্ধ বাবা-মা এবং দুই সন্তানের ভরণপোষণের আর কোনো উপায়ই দেখছেন না। শিক্ষক পেশায় থেকে আত্মসম্মানের ভয়ে কারও কাছে হাত পাততেও পারছেন না। অনেক শিক্ষকের বাচ্চার দুধ কেনারও পয়সা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত এক শিক্ষক জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। শিক্ষকদের অনলাইনে নিয়মিত লাইভ ক্লাস নিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে আমরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করছি। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা পাই না। অশ্রুসজল কণ্ঠে এই শিক্ষক সমকালকে বলেন, বর্তমান মহামারিতে চরম আর্থিক দৈন্যের মধ্যে দিনযাপন করছি। সংসার চালানোর জন্য আর কোনো অর্থ অবশিষ্ট নেই। আর্থিক এবং মানসিকভাবে অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি।

প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াধীন শিক্ষকদের সংগঠন বিপিটিএফের সভাপতি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সমকালকে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। অথচ ৬ মাস বেতন নেই, গেল রমজান মাসেও বেতন ও উৎসব ভাতাদির কোনো খবর হয়নি। শিক্ষকদের মধ্যে এখন চরম হতাশা।
জানা গেছে, দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৪২৭ জন। তার মধ্যে রাজস্ব খাতে ৬৫০ জন, আর প্রকল্পের এই ৭৭৭ জন। এই শিক্ষকরা ক্লাস নেওয়া বন্ধ করলে সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম একযোগে মুখথুবড়ে পড়বে। কারণ শিক্ষক অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক কোনো শিক্ষকই আর থাকবেন না।
শিক্ষকরা জানান, ২০১২ সালে স্টেপ প্রকল্প চালু হয়। তখন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে যোগ্য শিক্ষক দেওয়ার জন্য এ প্রকল্পের অধীনে এক হাজার ১৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সাকল্যে বেতন জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে (তখন স্কেল ছিল আট হাজার টাকার, ২০১৫ সালের বেতন স্কেলে তা ১৬ হাজার টাকা হয়) তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুই দফায় নিয়োগ দেওয়া মোট ১০১৫ জনের মধ্য থেকে ৭৭৭ জন শিক্ষক এখনও কর্মরত আছেন। বাকিরা চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন।

জানা গেছে, অভাবের তাড়না থেকে বাঁচতে বেতন-ভাতার জন্য এই শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট শাখার (বাজেট-২) যুগ্মসচিব সিরাজুন নূর চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই শিক্ষকদের বিষয়টি একটি প্রক্রিয়াগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাদের বিষয়ে এসআরও জারি করে রাজস্ব খাতভুক্ত করতে। একই শাখার উপসচিব তনিমা তাসরীন বলেন, এ শিক্ষকদের রাজস্ব খাতে আনার কাজটি প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। রাজস্ব খাতভুক্ত করতে দেরি হওয়ায় এর আগে আমরা একবার বিশেষ বিবেচনায় তাদের ৬ মাসের বেতন দিয়েছি। নতুন করে আর কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আমরা ওপর থেকে পাইনি।

৭৭৭ জন পলিটেকনিক শিক্ষকের ৬ মাস বেতন-ভাতা না পাওয়ার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুন্সী শাহাবুদ্দীন আহমেদ সোমবার সমকালকে বলেন, ৬ মাসের বেতন এই শিক্ষকরা পেয়েছিলেন, বাকিটাও তো এতদিনে হয়ে যাওয়ার কথা। তাদের বেতন দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সিদ্ধান্তও হয়েছে। আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে লিখেছিলাম। ইনশাল্লাহ ওনারা বেতন পাবেন। আমি আজই ফলোআপ করব তাদের বিষয়টি।

দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৭৭৭ জন শিক্ষক টানা ছয় মাস কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এ শিক্ষকরা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের (স্টেপ) শিক্ষক। প্রকল্পটি গত বছরের জুনে শেষ হয়ে যাওয়ার পর সরকার এ শিক্ষকদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে বিলম্ব হওয়ায় গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস এই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। তবে গত জানুয়ারি থেকে তারা আর কোনো বেতন-ভাতা পাননি।ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, প্রকল্প শেষ হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের মৌখিকভাবে কাজ করে যেতে বলা হয়েছে। তারাও গত জুন থেকে ক্লাস নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ছয় মাসের বেতন-ভাতা বাকি হলে গত ডিসেম্বরে ৬ মাসের বকেয়া বেতন পেয়েছিলেন। তা আবার ধারদেনা শোধ করতেই শেষ হয়ে গেছে। তারা বর্তমানে আত্মীয়স্বজনের কাছ থকে ধারদেনা করে চলছেন। এখন দেশের এই দুর্যোগের মধ্যে আর কারও কাছে ধারদেনা চাইতেও পারছেন না। তিনি তার বৃদ্ধ বাবা-মা এবং দুই সন্তানের ভরণপোষণের আর কোনো উপায়ই দেখছেন না। শিক্ষক পেশায় থেকে আত্মসম্মানের ভয়ে কারও কাছে হাত পাততেও পারছেন না। অনেক শিক্ষকের বাচ্চার দুধ কেনারও পয়সা নেই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত এক শিক্ষক জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। শিক্ষকদের অনলাইনে নিয়মিত লাইভ ক্লাস নিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে আমরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করছি। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা পাই না। অশ্রুসজল কণ্ঠে এই শিক্ষক সমকালকে বলেন, বর্তমান মহামারিতে চরম আর্থিক দৈন্যের মধ্যে দিনযাপন করছি। সংসার চালানোর জন্য আর কোনো অর্থ অবশিষ্ট নেই। আর্থিক এবং মানসিকভাবে অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি।প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াধীন শিক্ষকদের সংগঠন বিপিটিএফের সভাপতি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সমকালকে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। অথচ ৬ মাস বেতন নেই, গেল রমজান মাসেও বেতন ও উৎসব ভাতাদির কোনো খবর হয়নি। শিক্ষকদের মধ্যে এখন চরম হতাশা।জানা গেছে, দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৪২৭ জন। তার মধ্যে রাজস্ব খাতে ৬৫০ জন, আর প্রকল্পের এই ৭৭৭ জন। এই শিক্ষকরা ক্লাস নেওয়া বন্ধ করলে সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম একযোগে মুখথুবড়ে পড়বে। কারণ শিক্ষক অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক কোনো শিক্ষকই আর থাকবেন না।শিক্ষকরা জানান, ২০১২ সালে স্টেপ প্রকল্প চালু হয়। তখন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে যোগ্য শিক্ষক দেওয়ার জন্য এ প্রকল্পের অধীনে এক হাজার ১৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সাকল্যে বেতন জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে (তখন স্কেল ছিল আট হাজার টাকার, ২০১৫ সালের বেতন স্কেলে তা ১৬ হাজার টাকা হয়) তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুই দফায় নিয়োগ দেওয়া মোট ১০১৫ জনের মধ্য থেকে ৭৭৭ জন শিক্ষক এখনও কর্মরত আছেন। বাকিরা চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন।জানা গেছে, অভাবের তাড়না থেকে বাঁচতে বেতন-ভাতার জন্য এই শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট শাখার (বাজেট-২) যুগ্মসচিব সিরাজুন নূর চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই শিক্ষকদের বিষয়টি একটি প্রক্রিয়াগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাদের বিষয়ে এসআরও জারি করে রাজস্ব খাতভুক্ত করতে। একই শাখার উপসচিব তনিমা তাসরীন বলেন, এ শিক্ষকদের রাজস্ব খাতে আনার কাজটি প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। রাজস্ব খাতভুক্ত করতে দেরি হওয়ায় এর আগে আমরা একবার বিশেষ বিবেচনায় তাদের ৬ মাসের বেতন দিয়েছি। নতুন করে আর কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আমরা ওপর থেকে পাইনি।৭৭৭ জন পলিটেকনিক শিক্ষকের ৬ মাস বেতন-ভাতা না পাওয়ার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুন্সী শাহাবুদ্দীন আহমেদ সোমবার সমকালকে বলেন, ৬ মাসের বেতন এই শিক্ষকরা পেয়েছিলেন, বাকিটাও তো এতদিনে হয়ে যাওয়ার কথা। তাদের বেতন দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সিদ্ধান্তও হয়েছে। আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে লিখেছিলাম। ইনশাল্লাহ ওনারা বেতন পাবেন। আমি আজই ফলোআপ করব তাদের বিষয়টি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews