নোনয়ন পেলেই জয় নিশ্চিত, এমনটা মনে করেন আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। একারণে মাঠে শক্ত অবস্থান না থাকলেও চেষ্টা-তদবির করে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতেই বেশি মনযোগী দলের এই নেতারা। ৩০০ আসনে অন্তত ১০ হাজার নেতা রয়েছেন, যারা মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান রয়েছে, মনোনয়ন প্রত্যাশী এমন নেতার সংখ্যা কম বলে জানা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

তারা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যেসব নেতা মনোনয়ন পাওয়ার আশা করছেন, তাদের বেশির ভাগেরই নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত নয়। কিন্তু মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে চেষ্টা ও তদবিরে পিছিয়ে নেই তারা। এই নেতারা নিজেদের অবস্থান তৈরি না করে আগেই মনোনয়ন  নিশ্চিত করতে চান। তাদের ধারণা, মনোনয়ন পেলেই জিতে যাবেন।

মনোনয়ন পেতে দলীয় কার্যালয়, নেতাদের বাসা ও ব্যবসায়িক কার্যালয়ে ঘোরাফিরা করছেন, এমন অন্তত বিশ জন নেতার সঙ্গে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিবেদকের। তাদের অনেকেই স্বীকারও করেছেন একথা। তবে তারা এও জানিয়েছেন, দলের মনোনয়ন পেতে অনেক কিছু মেন্টেইন করতে হয়,নির্বাচনে জেতার জন্য এত কিছু রক্ষা করতে হয় না। তাই মনোনয়ন নিশ্চিত করতে আগেভাগেই তদবির করতে হয়।

মনোনয়ন প্রত্যাশী আরও  কয়েকজন নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনেও বিএনপির অংশগ্রহণের সম্ভাবনা কম। ফলে দলের মনোনয়ন পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ। আবার কারও মতে, নৌকার টিকিট পেলে মাঠের অবস্থান এমনিতেই হয়ে যাবে। মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশির ভাগ নেতার এমন ধারণা জন্মেছে।

আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের অনেক নেতাও একথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, নতুন করে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনে করেন, ভোট হবে ৫ জানুয়ারির মতো। ফলে মনোনয়ন পাওয়াটাই হলো তাদের আসল কাজ। সে কারণে মনোনয়নের দিকেই তাদের ঝোঁক বেশি। এদের সংখ্যা বেশি হলেও যোগ্য নেতারা ঠিকই গুরুত্বের সঙ্গে  মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নীতি-নির্ধারণী নেতারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাবেন তারাই, যারা প্রকৃতপক্ষে যোগ্য। 

দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি সবসময়ই বলে আসছেন—এবার নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক। ৫ জানুয়ারির মতো কাউকে বিজয়ী করার দায়িত্ব তিনি নেবেন না। প্রার্থীকে নিজ নিজ যোগ্যতায় বিজয়ী হতে হবে। তাই সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় কাজ করতে হবে। জনগণের দুয়ারে যেতে হবে। শেখ হাসিনার একথা অনুযায়ী যারা কাজ করছেন না, তারা মনোনয়ন পাবেন না। মনোনয়ন পেতে হলে মাঠ তৈরি করতে হবে।

দলের একাধিক নীতি-নির্ধারক জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। তাতে দেখা গেছে, মাঠে দুর্বল

হলেও তদবিরে এগিয়ে আছে, এমন মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাই বেশি।  যাচাই-বাছাইয়ের এই তালিকা শেখ হাসিনার হাতে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এপ্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী আছেন, মাঠের রাজনীতিতে যারা কোনও অবস্থান তৈরি করে নিতে পারেননি। তারা ব্যস্ত রয়েছেন মনোনয়ন কীভাবে নেওয়া যায়, সেই তদবিরে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছেও এমন একটি তালিকা রয়েছে।’

ড. রাজ্জাক বলেন, ‘মনোনয়ন পেতে হলে মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান থাকতে হবে। তদবির করে মনোনয়ন নেওয়া একেবারেই অসম্ভব।’

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘দল ক্ষমতায় থাকার কারণে রাজনীতিতে অবস্থান না থাকলেও, মনোনয়ন নেওয়ার জন্যে নেতাদের বড় একটি অংশ তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। তবে এ ধরনের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেই জানি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থানে রয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বারবারই বলে আসছেন— এবার কারও দায়িত্ব তিনি নেবেন না। এটা উনার সতর্কবার্তা।’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews