বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক (৭.৯%)। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে (৬৭%) শুল্ক ছাড়ের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এককভাবে সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী। ইউরোপীয় দেশগুলো বিক্রয়ের ওপর ১২ শতাংশ অগ্রাধিকারমূলক মার্জিন পায়, যা একটি উল্লেখযোগ্য মূল্যসুবিধা।
ডব্লিউটিওর একটি সমীক্ষামতে, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বাংলাদেশের রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে এবং বাংলাদেশ তার রপ্তানির ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ হারাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে (ডেইলি স্টার ২৯ জুন, ২০২৪)। অর্থাৎ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা কমবে এবং আমাদের পণ্যমূল্য প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। এলডিসি থেকে উত্তরণে পণ্য রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি হারে শুল্ক দিতে হবে ভারতের বাজারে।
এডিবির প্রকাশিত পলিসি ব্রিফ মতে, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের শুল্ক দিতে হবে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ হারে। আর প্রতিবেশী ভারতে এ হার হবে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ।
অবশ্যই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কিছু সুযোগ আনবে, তবে তার অধিকাংশই সম্মানসূচক। বিশ্ব জানবে, এই দেশের প্রতি চারজনে একজন দরিদ্র। অর্থাৎ আমাদের সম্মান আগের চেয়ে বাড়বে। কিন্তু আমি সম্মান দিয়ে কী করব। এখনো তৈরি পোশাক শিল্পকে শুল্ক ছাড়ে আমদানি সুবিধা দিতে হয়, ১৪ শতাংশ রপ্তানি কমলে, ইইউতে ১২ শতাংশ মার্জিন-সুবিধা হারালে আমার মানুষেরা কথিত সম্মান দিয়ে কী করবে?
যে দেশের প্রশ্নবিদ্ধ গণতন্ত্র, ভোট, মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে নিয়মিত নজরে রাখতে হয়, সেই দেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করলেই তার সম্মান ফিরবে?