মুখে মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীমূলক সিনেমা ‘বঙ্গবন্ধু’র নাম। একেতো ছবিটি পরিচালনা করছেন ভারতের বিখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল, তারউপর করোনার কারণে ছবিটির শুটিং হতে যাচ্ছে মুম্বাইতে! ফলে ছবিটির পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে চলছে বিশাল যজ্ঞ।
নানা কারণেই সিনেমাটি নিয়ে ভীষণ উত্তেজীত ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়া দেশের অভিনয় শিল্পীরা। আর সেই উত্তেজনা যেন ক্ষণে ক্ষণে বাড়িয়ে দিচ্ছে সরকারি মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে নিমন্ত্রণের ঘটনা!
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু’তে অভিনয় করতে যাওয়া শিল্পীরা। গেল শনিবারেই তারা ডাক পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে। যেকোনো শিল্পীর জন্য যা অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের ব্যাপার। শুধু আমন্ত্রণ নয়, প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্যে দীর্ঘক্ষণ কাটানোর সুযোগও পেয়েছেন তারা। তবে এই ‘সুবর্ণ সুযোগ’টি মিস হয়ে গেলো এই ছবিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে যাওয়া ফজলুর রহমান বাবুর।
‘বঙ্গবন্ধু’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র খন্দকার মোশতাক হচ্ছেন ফজলুর রহমান বাবু। গেল শনিবারে সবাই যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলেন, বাবু তখন ঢাকার বাইরে শুটিংয়ে ছিলেন। খুব অল্প সময়ের নোটিশে শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানোয় শুধু ঢাকার মধ্যে যারা ছিলেন, তারাই সুযোগটি পেয়েছেন।
ব্যক্তিগত দুঃখবোধ নিয়ে বাবু চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে শুটিং করতে যাওয়ার আগে এটাই সবচেয়ে বড় মিস। ঢাকায় থাকলে এমনটা হতো না! তবুও এতো ব্যস্ততার মধ্যে যে প্রধানমন্ত্রী শিল্পীদের সাথে দীর্ঘক্ষণ সময় দিয়ে দিক নির্দেশনামূলক কথা বলেছেন, এটা কম সৌভাগ্যের নয়।
বাবু বলেন, শিল্পীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ। তিনি বলেন, এমন ঐতিহাসিক সিনেমায় কাজের সুযোগ পাওয়া আমার অভিনেতা জীবনে নিঃসন্দেহে বিরাট প্রাপ্তির।
মুম্বাই ফিল্ম সিটিতে সেট তৈরী করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রটির জন্য। শোনা যাচ্ছে ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে শুটিং। ২২ জানুয়ারি থেকে শিল্পীরা মুম্বাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। তবে ফজলুর রহমান বাবু ঢাকা ছাড়বেন ৫ ফেব্রুয়ারি।
ইতিহাসের খলনায়ক তিনি। বাংলাদেশের ‘মীর জাফর’ হিসেবে কুখ্যাতি আছে তার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে নৃশংস হত্যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে যে নাম, তিনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ। অথচ বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি, ছিলেন অতি ভক্ত! মুখোশ পরা অতি বিনয়ী এই মানুষটির স্বরূপ উন্মোচন হবে এবার সিনেমায়! যে চরিত্রটিকে চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন বাবু।
তবে চরিত্রটি পর্দায় ঠিকঠাক তুলে ধরতে তার প্রস্তুতিও কম নয়। জানালেন, প্রত্যেকটা চরিত্রে অভিনয়ের জন্যই তো আলাদা করে প্রস্তুতির প্রয়োজন। সে ধরনের একটা কমন প্রস্তুতি তো মানসিকভাবে রয়েছেই। তবে বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্রে আমার যে চরিত্রটি এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, আমার জন্য তো বটেই। এই চলচ্চিত্রের বেশিরভাগ চরিত্রই পজিটিভ। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে যারা তার সহকর্মী ছিলেন, রাজনৈতিক নেতা প্রায় সবাই খুব পজিটিভ। লড়াই সংগ্রামে যারা পাশে থাকতেন সবাই কিন্তু পজিটিভ চরিত্র, শুধুমাত্র আমি যে চরিত্র প্লে করছি এটিই পুরোপুরি বিপরীত মেরুর। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকেও পুরোপুরি বিপরীত একটি চরিত্র।
চিত্রনাট্যের পাশাপাশি ইতিহাস ঘেঁটে মোশতাকের মনস্তত্ব নিজের মধ্যে ধারণ করছেন অভিনেতা বাবু। এখন শুধু ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর অপেক্ষা।