ঢাকা মহানগরের ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থাপনার ওপর আসন্ন দুর্যোগের সংবাদ পেয়ে খুব বিচলিত বোধ করছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র বা টিএসসির বর্তমান স্থাপনা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এমন খবরের পর জানতে পেলাম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনও ভাঙা হবে। কারণ, বলা হচ্ছে, উন্নয়নের পথে এই স্থাপনাগুলো বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে আর ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কদিন আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমআরটি-৬-এর সঙ্গে কমলাপুর স্টেশনের যোগাযোগ ঘটাতে হবে কিন্তু বর্তমান স্টেশনটি এম আরটি-৬-এর প্রস্তাবিত পথের সঙ্গে ঠিক মিলছে না। কাজেই ১৯৬০ দশকে নির্মিত কমলাপুর স্টেশনটি ভেঙে নতুন জায়গায় তৈরি করতে হবে।

একটি অত্যাধুনিক গণপরিবহন কেন্দ্র উন্নয়ন সবারই প্রয়োজন। কিন্তু সে উন্নয়নের সামাজিক ও ঐতিহাসিক মূল্য কত দিতে হবে? উন্নয়ন কি ইতিহাস আর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে না? নগর প্রশাসন আর নীতিনির্ধারকেরা কি একটা শহরের ঐতিহ্যকে তোয়াক্কা না করে উন্নয়নের বুলডোজার চালিয়ে দেবেন?

আমি ভাবছিলাম রেলওয়ে ও এমআর টি-৬ কর্তৃপক্ষ উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা ভেঙে ফেলার নৈতিক মনোবেদনা অনুভব করেছিলেন কি না। মার্কিন স্থপতি লুই কানের মহাকাব্যিক সংসদ ভবন আর গ্রিক স্থপতি-পরিকল্পনাবিদ কনস্টান্টিনোস ডক্সিয়াডিসের টিএসসির পাশাপাশি মার্কিন স্থপতি ড্যানিয়েল বার্নহাম এবং বব বুইয়ের কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ১৯৬০ দশকে নান্দনিক ও সামাজিক আধুনিকতার অন্যতম প্রতীক। জাতিগতভাবে ভাবতে হবে ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন ধারার মিলটা কীভাবে হচ্ছে।

আধুনিক স্থাপত্যধারায় তৈরি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন দক্ষিণ এশিয়ার আধুনিক ট্রেন যোগাযোগব্যবস্থার একটি ব্যতিক্রমী প্রতীক। ১৮৮০ দশকে তৈরি মুম্বাইয়ের ভিক্টোরিয়া টার্মিনাল, যেটা এখন ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল নামে পরিচিত, আর বিংশ শতাব্দীর শুরুতে নির্মিত কলকাতার হাওড়া স্টেশন ছিল ঔপনিবেশিক স্থাপত্যধারার প্রতিনিধি। এ কারণে কমলাপুরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews