বাংলাদেশের আঞ্চলিক রান্নার বৈচিত্র্যে শুঁটকি বা শুকনো মাছের স্থান বেশ অনন্য। এটি আমাদের খাদ্যসংস্কৃতিরও একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলের মানুষই শুঁটকি খায়, তবে রান্নার ধরন আর মসলার ব্যবহার ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় স্বাদেও তৈরি হয় বৈচিত্র্যতা। কোথাও ভর্তায় সরিষার তেল আর কাঁচা মরিচের ঝাঁজ চোখে জল আনে, কোথাও আবার ঝোলের ঝাল–ঝাল স্বাদ ভাতের সঙ্গে দেয় দুর্দান্ত স্বাদ।
চট্টগ্রামের চিংড়ি শুঁটকি ভর্তা
চট্টগ্রামে চিংড়ি শুঁটকি অত্যন্ত জনপ্রিয়। সরিষার তেল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, লবণ দিয়ে মেখে তৈরি হয় মজাদার শুঁটকি ভর্তা। কখনও লেবুর রস বা ধনেপাতা কুচিও যোগ করা হয়, যা স্বাদে বাড়তি মাত্রা আনে।
সিলেটের শুঁটকি ঝোল
সিলেট অঞ্চলে শুঁটকি ঝোল ভীষণ জনপ্রিয়। প্রচুর পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা–রসুন দিয়ে ঝাল–ঝাল করে রান্না করা হয়। অনেক সময় এতে মটরশুঁটি বা আলুও যোগ করা হয়। গরম ভাতের সঙ্গে এর স্বাদ অতুলনীয়।
বরিশালের শুঁটকি তরকারি
বরিশালের শুঁটকি রান্নায় আলাদা বৈশিষ্ট্য হলো শাক–সবজি যোগ করা। যেমন লাউ, মিষ্টি কুমড়া বা ঢেঁড়স দিয়ে শুঁটকি রান্না করা হয়। এতে মাছের গন্ধ কমে যায় এবং তরকারি হয় আরও সুস্বাদু।
কক্সবাজারের শুঁটকি ভুনা
কক্সবাজারে শুকনো মাছের ভুনা খ্যাত। সরিষার তেল, শুকনা মরিচ ও প্রচুর পেঁয়াজ দিয়ে মচমচে ভুনা তৈরি করা হয়। বিশেষ করে লইট্টা শুঁটকি ভুনা এখানে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
পুরান ঢাকার শুঁটকি মিশ্রণ
পুরান ঢাকায় একসঙ্গে বিভিন্ন শুঁটকি মিশিয়ে রান্না করার প্রথা রয়েছে। শুকনো চিংড়ি, লইট্টা ও চিতল শুঁটকি একসঙ্গে ভেজে বা ভুনা করে পরিবেশন করা হয়। এর গন্ধ ও স্বাদ একেবারেই ভিন্ন।