হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ভূলকোট- নন্দনপুর সড়কে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সড়কটি সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কমদামি ইরানি বিটুমিন এবং সড়কে ১২ এমএম সিলকোড পাথরের স্তর দিয়ে কার্পেটিং করার নিয়ম থাকলেও দেওয়া হচ্ছে না সিলকোডের কার্পেটিং।

নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংস্কার কাজ শুরু করে আশুগঞ্জের বেঙ্গল কনস্ট্রাকশন। কাজের শুরুতেই হাতের ঠেলায় উঠে যাচ্ছে সড়কের কার্পেটিং। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে তারা এ দুর্নীতি করে যাচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংষ্কার করা হয়নি। প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অর্ধ লক্ষাধিক জনগণ আশা যাওয়া করে। উপজেলার লামাতাশি ইউনিয়নের মূল সড়ক ভূলকোট-নন্দনপুর সড়ক। এই রাস্তা হচ্ছে ওই ইউনিয়নের সদরে যাওয়ার রাস্তা।

দীর্ঘদিন পর ভাঙ্গা সড়কের মেরামতের কাজ শুরু দেখে আনন্দে আত্মহারা ওই ইউনিয়নের লোকজন। কাজের শেষ দিকে ওই আনন্দ আর থাকেনি।

বর্তমান সরকার ২ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজের জন্য আশুগঞ্জের বেঙ্গল কনস্ট্রাকশন নামের এক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেন। সড়কের সংষ্কার কাজের মূল্য ধরা হয় ৩৭ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল কনস্ট্রাকশন বাহুবল উপজেলা ভবন কমপ্লেক্সের ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার কাজেও তারা ব্যবহার করছে নিম্নমানের ইট।

পিকেএসপির রড দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে নিম্নমানের রড। সিমেন্ট-বালুর মিশ্রিত আস্তরে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সামনেই হচ্ছে এ দুর্নীতি।

এ দিকে ভূলকোট-নন্দনপুর সড়কের দেখভালের দায়িত্ব পান বাহুবল উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিন। এলাবাসীর অভিযোগ কাজ শুরুর প্রথম দিকে উপজেলা প্রকৌশলীর সামনেই ইটের খোয়ার সঙ্গে নিম্নমানের ইটের খোয়া মিশিয়ে সড়কের ওপর ফেলে। তাও আবার ভালো করে ডলন না দিয়েই কার্পেটিং শুরু করে।

বৃষ্টির মাঝে এ সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ করলে স্থানীয় গ্রামবাসী বাধা দেন। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

শনিবার বিকালে গ্রামবাসী সড়কে এসে হাতের ঠেলা দিয়ে তুলে ফেলেন কার্পেটিংয়ের অনেক অংশ। নিম্নমানের কাজ করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। অনেকেই কার্পেটিং হাত দিয়ে তুলে সামাজিক মাধ্যমে লাইভ দিয়েছেন। ভাইরাল হয়ে যায় পুরো ভিডিওটি।

স্থানীয় যুবক শামছুদ্দিন রুবেল বলেন, এ সড়কটি নিম্নমানের ইটের খোয়া ও ভিটুমিন কম দিয়ে কার্পেটিং করার কারণে হাতের আঙুল দিয়ে খামছি দিয়ে তুলে ফেলা যাচ্ছে। সরকারি সিডিউল মোতাবেক কাজ করার কথা থাকলেও ঠিকঠাক কাজ হচ্ছে না।

বাহুবল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী সাংবাদিক জাবেদ আলী বলেন, ওই রাস্তায় সরকারি কাজের ষোল আনার মধ্যে বারো আনা ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। কাজ হচ্ছে ৪ আনার। আমাদের সর্ষের ভিতরে ভূত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মহিউদ্দিনের সাথে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জসীম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি ফেসবুকে (শনিবার) দেখেছি। জেলার সমন্বয় মিটিংয়ে বিষয়টি তুলেছি। ডিসি স্যার তাৎক্ষণিক বিষয়টি দেখার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কাজ বন্ধ রেখেছে এলাকাবাসী, এলাকায় জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews