ভারতে অনুষ্ঠিতব্য নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে আগামীকাল দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। আজ সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে উপস্থিত ছিলেন নারী দলের প্রধান কোচ সারোয়ার ইমরান। সেখানে জানতে চাওয়া হয় স্পিনার জান্নাতুল সুমনার বাদ পড়া সম্পর্কে।
সুমনার পরিবর্তে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন অফস্পিনার নিশিতা আক্তার।
সারোয়ার ইমরান বলেন, ‘সুমনার ব্যাপারে আমরাও এটা নিয়ে আমাদের কোচিং স্টাফ থেকে আরম্ভ করে ক্যাপ্টেনও ছিল। আমাদের অনেক দিন লেগেছে এই সিদ্ধান্ত নিতে। পাকিস্তানের সাথে আমরা যখন ওইখানে খেলি বিশ্বকাপে তখন ওদের বাঁহাতি ব্যাটারটা নট আউট ছিল। সেই সময় ক্যাপ্টেন যখন সুমনাকে বল করতে বলল সুমনা বল করে নাই এবং ঢাকাতে হোক, প্র্যাকটিসে হোক সবসময় বাঁহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে ও বল করতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মেইন খেলা হলো পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সাথে। আমাদের একটা অফস্পিনার লাগবে যে বাঁহাতিকে বল করতে পারে। এই লেফটিকে বল করতে পারে আর যেই অফস্পিনারকে নেওয়া হয়েছে তার একুরেসি, তার থিঙ্কিং, তার সাহস অন্যরকম। একুরেসি অনেক বেটার তার থেকে। সেটা রাইটি হোক, লেফটি হোক। তো সেই চিন্তা থেকে সুমনা বাদ পড়ছে। সুমনা কোনো পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়ে নাই। আমাদের টিমের ডিমান্ডের ওপর বাদ পড়ছে সুমনা।’
কোচের এমন মন্তব্য নিয়ে প্রতিবাদী সুরে এই ক্রিকেটার বলেন,‘মার মনে হয় বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার। যখন আমরা দল আর দেশের কথা ভাবি, তখন যদি এভাবে ‘‘পুরস্কার” পাই—এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
বল না করা প্রসঙ্গে সুমনার ব্যাখ্যা, ‘ষ ম্যাচে আমি নিজেকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলাম না। নিজেকে জোর করেও বল করতে পারিনি, এক-দুই বলের বেশি মনোযোগ ধরে রাখতে পারিনি। সম্ভবত অতিরিক্ত ক্লান্তি আর অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠার কারণেই এমন হয়েছে।’
সুমনা বলেন, ‘প্রশ্ন হলো—আমার কি তখন ক্যাপ্টেনকে জানানো উচিত ছিল? যদি আমি দুই-তিনটা বাউন্ডারি খেতাম, তাহলে নিশ্চয়ই বলা হতো কেন আমি আগে বলিনি। ওই সময় ছিল ৩৫তম ওভার। তখন আমাদের পরিকল্পনা ছিল যতটা সম্ভব ম্যাচ লম্বা করা। কিন্তু খেলা শেষ হয়েছে ৩৯তম ওভারে। যদি আমরা ৩৮তম ওভারে শেষ করতাম, তাহলে আমরা কোয়ালিফাই করতে পারতাম না। আবার যদি আমি ১০–১২ রান দিয়ে দিতাম এবং ম্যাচ ২–৩ ওভার আগেই শেষ হয়ে যেত, তাহলে ম্যাচ শেষে হয়তো আমাকে প্রশ্ন করা হতো কী হলো আমার। তখন যদি আমি বলতাম—আমি কন্ট্রোলে ছিলাম না, তবে আবার প্রশ্ন আসত কেন আমি আগে জানাইনি।’
সুমনা আরও বলেন, ‘আমার কাছে বিষয়টা একেবারেই পরিষ্কার—দেশ আর দলের জন্য খেলতে গিয়ে যদি এভাবে আচরণ পেতে হয়, তবে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’