আজ ৩০ মে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুন:প্রবর্তনকারী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ কালজয়ী দর্শনের এই প্রবক্তা ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের রুপকার ও সফল রাষ্ট্রনায়ক। শাহাদাত বার্ষিকীতে দল মত নির্বিশেষে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন নেটাগরিকরা। শহীদ জিয়ার অসামান্য অবদানগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি জাতির এই ক্রান্তিকালে তাঁর বড়ই অভাব বোধ করছেন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদরা।

মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ও স্থপতি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অপরিহার্য মনে করতেন গণতন্ত্রকে। স্বপ্ন দেখতেন এক স্বনির্ভর বাংলাদেশের। অন্য কোনো নেতার মতো তিনি শুধু স্বপ্নে বিভোর থাকেননি। যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য। সে লক্ষ্য সামনে রেখে ১৯৭৭ সালে তিনি প্রণয়ন করেন ১৯ দফা কর্মসূচি। তার ঘোষিত এই ১৯ দফা ছিল উন্নয়নের মূলমন্ত্র। প্রেসিডেন্ট জিয়ার সময়ে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছিল, তার পেছনে গাইডলাইন হিসেবে কাজ করেছে ১৯ দফা।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে শাহাদাত বরণ করেন। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

শাহাদাত বার্ষিকীতে স্মরণ করে নেটিজেনরা বলছেন, জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি।প্রেসিডেন্ট জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে ৫৪ বছরের জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণিত তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন।

ফেসবুকে আইনজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তুহিন মালিক লিখেছেন, বহু মত, বহু দল, বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতির বাংলাদেশকে একক জাতীয়তাবাদের ছাতায় নিয়ে এসেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আধিপত্যবাদের রক্তচক্ষুকে চ্যালেঞ্জ করে শীর উঁচু করে, চোখে চোখ রেখে, জাতিকে নিজের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে শিখিয়েছেন। গোলামীর শিকলকে গুড়িয়ে দিয়ে সার্ক গঠনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয়ার আঞ্চলিক উদীয়মান নতুন এক নেতৃত্ব উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্সের অধিনায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম।

এক দলীয় শাসনের পরিবর্তে জিয়াউর রহমান হলেন বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের জনক। উদারনৈতিক মধ‍্যপন্থি বহুদলীয় গণতন্ত্রের দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশী ও মুসলিম জাতীয়তাবাদের মহানায়ক। সেকারণেই জিয়াউর রহমানকে দলীয়করণ বা বানিজ‍্যিকরণ করার প্রয়োজন হয়নি। হাজারো মূর্তি তৈরি করে অমর করার প্রয়োজন হয়নি। আইন পাশ করে বাধ্যতামূলক শ্রদ্ধা জানানোর প্রয়োজন হয়নি। সেকারণেই উনি সকল দল মতের উর্ধ্বে সবারই শহীদ জিয়া। স্বীয় কীর্তিতে অমর ইতিহাসের মহানায়ক। আজ ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উনাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন।

সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মরণে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, স্বাধীনতার ঘোষক, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া জেড ফোর্স অধিনায়ক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেবের শাহাদাৎ বার্ষিকী ৩০শে মে। শহীদ জিয়া প্রকৃত অর্থে গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের একমাত্র স্টেটম‍্যান। স্বাধীনতা উত্তর শ্বাপদসঙ্কূল রাজনৈতিক, সামরিক পথপরিক্রমা, দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রে দিশাহীন জাতিকে দেখিয়েছিলেন আলোর পথ। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন কৃষি, শিল্প, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে স্বনির্ভরতার দিকে। দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।

শহীদ জিয়ার বিরামহীন ছুটে চলাই আধুনিক বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক অজেয় ধুমকেতু। শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক। ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় আবারো বিএনপি'র সামনে এসেছে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ। শহীদ জিয়ার কীর্তিগাঁথা আমরা শুনেছি অগ্রজদের কাছ থেকে। উনার ১৯ দফার মর্মার্থই ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির ম‍্যাগনা কার্টা। ...বিনম্র শ্রদ্ধা হে মহান নেতা। শহীদ জিয়া অমর হউন, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। ভালবাসা অবিরাম...।

মামুন রশিদ লিখেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের সফল প্রেসিডেন্ট। ভারতের আধিপত্য থেকে দেশ এবং জাতিকে রক্ষা করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এক কঠিন মুহূর্তে। তিনি প্রথম সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সেই সংস্কার সম্পূর্ণ করতে তাকে দেওয়া হয়নি। তিনি ভারতের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছিলেন।

১৯৭৫ সালে সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেছিলেন। সিপাহী জনতার বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌমত্বের মর্যাদা পায়। জিয়াউর রহমান সংস্কারের মধ্য দিয়ে বিপ্লবকে সুসংহত এবং রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করেছিলেন।

জিয়াউর রহমানের এই অবদানের জন্য এদেশের মানুষের হৃদয়ে গেথে থাকবেন। দেশ এবং জাতির জন্য জিয়াউর রহমান শহীদ হয়েছিলেন। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews