বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, কেউ আবার বলছে, আমরা তো কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য গণঅভ্যুত্থান করিনি। তাহলে লুটপাট করার জন্যে আর জামায়াতের কাছ থেকে প্রাডো গাড়ি নেওয়ার জন্যে? আগে পকেটে মানিব্যাগ ছিল না, এখন বিশাল অফিস। বিভিন্নভাবে পত্র-পত্রিকায় এসেছে। তারা বাংলাদেশকে হতাশ করেছে। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনকে বিতর্কিত করেছে।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন নতুন দরবেশ নামে একজনকে পাওয়া গেছে। যিনি ৪০০ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। পুরাতন দরবেশকে আমরা বিদায় করার পর আরেকজন নতুন দরবেশ এসেছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র হচ্ছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। হাসিনা করেছে ১৬-১৭ বছর ধরে। কোনোভাবেই সে নির্বাচন মানতে চায়নি। একটা জালিয়াতির নির্বাচন করে ক্ষমতায় ছিল। এত বড় খুনি, গণহত্যাকারী, নির্যাতনকারী, লুটেরা আর এ দেশে দ্বিতীয় কেউ জন্মেছে বলে আমার জানা নেই। শেখ হাসিনাকে বিদায় করা হয়েছে গণতন্ত্রের প্রত্যাশায়। এখনো যদি ভোটের দাবি জানাতে হয়, এর থেকে লজ্জা আর কিছু নেই।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এই আন্দোলনে যারা কখনোই ছিল না, তারা এখন সরকার পরিচালনা করছে। আমি তাদের ছোট করছি না। গণতন্ত্র চাওয়ার কারণে, রাস্তায় মিছিল করার কারণে হয়নি তাদের বিরুদ্ধে একটা মামলাও হয়নি। এখন আপনারা একটা ভালো কাজ (নির্বাচন) করে যান, ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে আপনাদের নাম থাকবে।
বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে আপনি যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিবেন, তত দেশের জন্য মঙ্গল হবে। বিশৃঙ্খলা থেকে দেশ রক্ষা পাবে এবং আপনাদেরও মানসম্মান থাকবে।
দুদু বলেন, মানুষ ৫ আগস্টের পর স্বপ্ন দেখেছে তারা যে ১৬ বছর ভোট দিতে পারেননি, হাসিনার পতনের পর দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করেছে এবার ভোট দেওয়ার দিনটা এসেছে। বিএনপি ১৬-১৭ বছর ধরে নিরলসভাবে কাজ করে গেছে। গুম-খুনের শিকার হয়েছে, ফাঁসির দড়ি কাঁধে নিয়েছে। প্রায় পৌনে পাঁচ হাজার নেতাকর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছে। এটা শুধু বিএনপির লিস্টে আছে। এর বাইরেও অনেকে আছে। এত ত্যাগ করেছে একমাত্র গণতন্ত্রের জন্য।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া লন্ডন থেকে যখন দেশে আসলেন, শুধু ঢাকা শহর নয়; সারা বাংলাদেশটা যেন রাস্তায় নেমে এসেছে। সারা দেশটা উদগ্রীব হয়েছিল। খালেদা জিয়া শুধু আমাদের নেত্রীই নন, সারা বিশ্বের গণতন্ত্রের আন্দোলনের প্রতীকে রূপান্তরিত হয়েছেন। তিনি গণতন্ত্রের মাতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কোভিদ ব্যাপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, রেজাবউদ্দোলা সহ প্রমুখ।