আধা কিলোমিটারের কম দূরত্বে শনিবার জি এম কাদের ও রওশন এরশাদের ডাকা দুই সভা হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে দু’পক্ষের উত্তেজনাও ছিল। তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে রওশনপন্থি জাতীয় পার্টি (জাপা) সভা স্থগিত করেছে। তবে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা হবে।
জাপার (রওশন) কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি সভা রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে রওশনপন্থি জাপার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ জানান, সভাটি স্থগিত করা হয়েছে। এর পরিবর্তে ঢাকার ১০টি পয়েন্টে তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনসাধারণের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হবে। এই তীব্র তাপপ্রবাহে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করা তামাশার শামিল।
জাপার প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জামানা থেকেই জি এম কাদের ও রওশন এরশাদের দ্বন্দ্ব চলছিল। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তা চরমে পৌঁছে। রওশনপন্থিদের মনোনয়ন দেননি জি এম কাদের। এতে ক্ষিপ্ত রওশন নির্বাচন বর্জন করেন।
ভোটে মাত্র ১১ আসন পায় লাঙ্গল। দলটির দুই কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ কয়েক জ্যেষ্ঠ নেতা দল ছেড়ে রওশনের পক্ষ নেন। গত ২৯ জানুয়ারি নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন রওশন। গত ৯ মার্চ তাঁর অনুসারীদের সম্মেলনে তিনি একই পদে নির্বাচিত হন। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ষষ্ঠবারের মতো ভাঙে জাপা।
গত ২০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ সদস্যের নাম ঘোষণা করেন রওশন। তাদের কয়েকজন জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপার নেতা। পাল্টা হিসেবে জি এম কাদের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা ডাকেন। তাঁর রাজনৈতিক উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, যাদের নাম ঘোষণা করেছে তারা জাতীয় পার্টিতেই রয়েছেন।
জাপা সূত্রের খবর, তা দেখাতেই বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের সভা ডেকেছেন। রওশনপন্থিদের সভা ঠেকাতে পুলিশে অভিযোগও দিয়েছিল জাপা, যাতে তারা সভা আয়োজনের হল ভাড়া না পায়।
ফিরোজ রশিদ সরকারের সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যেভাবে চলছে, ভবিষ্যতে বড় রাজনৈতিক দলের বাইরে কেউ টিকতে পারবে না। ব্যাংকগুলো যেভাবে একীভূত হয়ে যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো মার্জ হয়ে যাবে। একটি দল ছাড়া অন্য দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশের প্রতি ইঙ্গিত করে ফিরোজ রশীদ বলেন, বন্দনা ছাড়া জাতীয় পার্টির সামনে আর কোনো রাজনীতি নেই। আগে জাতীয় পার্টিকে বলা হতো গৃহপালিত বিরোধী দল। আর এখন বলা হয় ক্রীতদাস।
জাপার (রওশন) সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, আমরাই মূল স্রোত। অচিরেই বুঝতে পারবেন লাঙ্গল কার।
সংবাদ সম্মেলনে রওশন অংশের কো-চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সুনীল শুভ রায়, মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।