শহরের এক ব্যস্ত ফুটপাতে একদল তরুণ-তরুণী রক সংগীতের ছন্দে নাচছে। কেউ চুল ঝাঁকাচ্ছে, ছন্দের সঙ্গে সংগতি রেখে কারও আবার দুলছে পুরো দেহ। এমনটা বিশ্বের বেশির ভাগ শহরে একেবারেই স্বাভাবিক দৃশ্য। কিন্তু এই দৃশ্যের ভিডিওটিই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়েছে ভাইরাল। ভিডিওটি দেখেছে লাখ লাখ মানুষ। কারণ, এই দৃশ্য দেখা গেছে ইরানের রাজধানী তেহরানের রাস্তায়।
ইরানে পশ্চিমা রক সংগীত নিষিদ্ধ, নিষিদ্ধ নারীদের ধূমপান কিংবা প্রকাশ্যে নৃত্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তেহরানে নিষিদ্ধ নারীদের চুল খোলা রাখা।
দেশটির বাধ্যতামূলক হিজাব আইন অনুযায়ী নারীদের পুরো মাথা ও শরীর ঢেকে রাখতে হয়। শুধু মুখ ও কবজির নিচের অংশ মুক্ত রাখা যায়। প্রকাশ্যে নারীর কান বা কনুই দেখা গেলেও সেটি অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তেহরানে মাসা আমিনি নামের এক তরুণীকে ‘অশোভনভাবে হিজাব’ পরার অভিযোগে আটক করে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ। মাসার মৃত্যু হয় তাদের হেফাজতেই। যার প্রতিক্রিয়ায় ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে কয়েক মাসব্যাপী আন্দোলন। সেই আন্দোলন অবশ্য কেবল বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের অবসান চায়নি, বরং পুরো ইসলামি প্রজাতন্ত্রেরই অবসান চেয়েছিল। যদিও সেই বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জিত হয়নি, তবে ওই আন্দোলন ইরানের জনজীবনকে বদলে দিয়েছে গভীরভাবে।