বাচ্চাদের পছন্দের খাদ্য তালিকায় ভাজাপোড়া, স্ন্যাকস, ফাস্টফুড এবং মিষ্টি সবসময় দখল করে থাকে। এগুলো কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত? শিশুদের সুস্বাস্থ্যের জন্য সোডিয়াম, চর্বি, চিনি এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরপুর খাদ্যের ব্যপারে সতর্ক হতে হবে। কমপক্ষে ১০ টি খাবার রয়েছে যা বহুল প্রচলিত, কিন্তু শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য  ক্ষতিকর। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেইসব খাবারগুলো সম্পর্কে:

ফ্রুট স্ন্যাক্স: দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্য ও পানীয়র নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বিক্রির জন্য 'ফল' শব্দটি ব্যবহার করে আসছে; অথচ সেসব খাদ্যপণ্যের পুষ্টিগুণ নিয়েই সন্দেহ আছে।

বিজ্ঞাপন

চটকদার বিজ্ঞাপনের কারণে আমরাও আকৃষ্ট হই। উদাহরণস্বরুপ- ফ্রুট কেক কিংবা ফ্রুট ক্যান্ডি, যেসব খাবারে চিনির সিরাপ ভরা থাকে সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। এগুলো বাচ্চাদের দাঁতে লেগে থেকে মারাত্মক ক্ষতি করে।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই: ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের সাথে শিশুদের বন্ধুত্ব দিনদিন বেড়েই চলেছে। ভাজাপোড়ার সমস্যা শুধুমাত্র অস্বাস্থ্যকর ট্রান্স ফ্যাট এবং ক্যালরি নয়। এ জাতীয় ভাজাপোড়া খাবার অত্যাধিক পরিমাণে খেলে শিশুর অন্য সবজির প্রতি রুচি তৈরি নাও হতে পারে। আপনার বাচ্চার এসবের প্রতি আগ্রহের লাগাম টেনে ধরতে বাড়িতে মিষ্টি আলু ফ্রাই বা বেক করার চেষ্টা করুন। কারণ এতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন সি এবং পটাশিয়াম।

চিনির সিরিয়াল: সিরিয়াল এখন বাচ্চাদের খুবই পচ্ছন্দের। কিন্তু এর পাশাপাশি এটিও সবারে অজানা নয় যে বেশিরভাগ চিনিযুক্ত সিরিয়ালে ফাইবার থাকে খুব অল্প পরিমাণে এবং চিনি থাকে বেশি। তাই এমন সিরিয়াল বেছে নিতে হবে যাতে ১০ গ্রামের কম চিনি এবং কমপক্ষে তিন গ্রাম ফাইবার থাকে।

ডেলি খাবার: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস, যেমন হট ডগ বা বোলোগনা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। হট ডগে সোডিয়াম, চর্বি এবং নাইট্রেট থাকে যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। গরুর মাংসের পরিবর্তে আপনি মুরগির ব্যবহার বাড়াতে পারেন। তবে অবশ্যই তাজা মাংস ব্যবহার করতে হবে।

মিষ্টি পানীয়: সোডা স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং বাচ্চাদের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। যারা সোডা বা কোলা পান করে তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং মোটা হয়ে যায়। সাথে তারা ক্যাভিটিও সৃষ্টি করবে। এছাড়া প্যাকেটজাত ফলের পানীয়ও সোডার মতোই খারাপ হতে পারে। বিজ্ঞানীদের দাবি, যদি এসব পণ্য ১০০ শতাংশ ফল থেকে তৈরি না হয় তবে তাদের পুষ্টির মূল্য সোডার মতোই কম। তাই আপনার সন্তানের প্যাকেটজাত ফলের জুস খাওয়া সীমিত করুন। পাশাপাশি তাকে প্রচুর দুধ ও পানি পান করতে উৎসাহিত করুন।

গ্র্যানোলা বার: গ্রানোলা বারের অনেক বৈচিত্র্যময় উপাদান রয়েছে। যা এটিকে পুষ্টিকর খাবার থেকে ডেজার্টে পরিণত করে ফেলে। এটি খেতে অনেক মিষ্টি। যে বারগুলিতে কমপক্ষে দুই গ্রাম ফাইবার এবং ১০ গ্রামের কম চিনি রয়েছে, এবং যেগুলোতে কম বা কোন স্যাচুরেটেড ফ্যাট নেই এবং কৃত্রিম মিষ্টি নেই সেগুলো চাইলে খেতে পারেন।

স্পোর্টস ড্রিংকস: বাচ্চারা ক্রিকেট বা ব্যাডমিন্টন খেলার পর মারাত্মক তৃষ্ণার্ত হতে পারে। সে সময় তাকে স্পোর্টস ড্রিংক পাণ করান থেকে বিরত থাকুন। বাচ্চারা সহজেই যেকোন স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে উঠে। ফলে পানি পান করা অপছন্দ করতে শুরু করতে পারে। চাইলে তাকে এক গ্লাস চকলেট দুধ পান করতে দিতে পারেন। কারণ এতে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের সঠিক মিশ্রণ থাকে। যা পেশি মেরামত করতে সাহায্য করে।

মধু: শিশুর অন্তত এক বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত মধু দেবেন না। কারণ এতে স্পোর থাকতে পারে যা বোটুলিজমের কারণ হতে পারে। যার লক্ষণ হিসেবে শুষ্ক মুখ, বমি, পক্ষাঘাত এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে তারা বোটুলিজমের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। এই কারণেই চিকিত্সকরা মধু রয়েছে এমন পণ্যগুলি শিশুদের দিতে নিষেধ করেন।

প্যাকেটজাত নুডলস: নুডুলসের পুষ্টিগুণ একেবারে কম নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। দুই থেকে তিন বছরের বাচ্চাদের প্রতিদিন ১,০০০ মিলিগ্রাম এবং আট বছর বয়সী বাচ্চাদের প্রতিদিন ১,২০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা উচিত নয়। এদিকে বেশিরভাগ প্যাকেটজাত নুডুলস বা পাস্তার একবারের পরিবেশনে এই সীমার অর্ধেকেরও বেশি সোডিয়াম থাকে।

পনির: পনির ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের একটি দারুণ উৎস। এক টুকরো পনিরে ১০০ ক্যালরি এবং ১০ গ্রাম চর্বি থাকতে পারে। এছাড়া দুগ্ধজাত খাবারের জন্য আদর্শ পরিমাণ হলো: ২-৩ বছর বয়সীদের জন্য দুই কাপ এবং ৪-৮ বছর বয়সীদের জন্য আড়াই কাপ। মাত্র ৪২.৫ গ্রাম পনিরকে এক কাপ দুধের সমপরিমাণ ধরা হয়।

সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews