আইফোন ও আইপ্যাডে নতুন এক ‘অ্যাক্সেসিবিলিটি’ ফিচার এনেছে অ্যাপল। কোম্পানিটির দাবি, চোখে বা কানের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের জন্য ফিচারটি তৈরি করেছে তারা।
প্রযুক্তি বা ডিজিটাল দুনিয়ায় ‘অ্যাক্সেসিবিলিটি’ মানে হচ্ছে কোনো প্রযুক্তি, সফটওয়্যার বা সেবা যেন শারীরিক প্রতিবন্ধী’সহ সব মানুষ সহজে ব্যবহার করতে পারেন, সেটার নিশ্চয়তা দেওয়া।
‘গ্লোবাল অ্যাক্সেসিবিলিটি অ্যাওয়ারনেস ডে’র আগের দিন বুধবার অ্যাপল ঘোষণা দিয়েছে, এ বছর আইওএসে নতুন কিছু অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার চালু করবে তারা। এসব ফিচারের মধ্যে থাকবে লাইভ ক্যাপশন, ব্যক্তিগত ভয়েস রেপ্লিকেশন বা নিজের কণ্ঠ অনুকরণ, পড়ার জন্য উন্নত টুল, দৃষ্টিহীনদের জন্য ব্রেইল রিডার উন্নয়ন এবং অ্যাপ স্টোরে ‘নিউট্রিশন লেবেল’ অ্যাপ কী ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে, তা সহজভাবে দেখানো।
অ্যাপলের গ্লোবাল অ্যাক্সেসিবিলিটি নীতিমালা ও উদ্যোগের সিনিয়র ডিরেক্টর সারা হারলিঙ্গার বলেছেন, ‘নিউট্রিশন লেবেলস’ ফিচারের মাধ্যমে অ্যাপ ডেভেলপাররা ভবিষ্যতে আরও বেশি অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার যোগ করতে উৎসাহ পাবেন বলে আশা করছেন তারা।
“ডেভেলপাররা এ ফিচারের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন অ্যাক্সেসিবল বা সবার জন্য ব্যবহারযোগ্য হওয়া মানে কী ও কেন তা গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটার ওপর ভিত্তি করে আরও কাজ করতে পারবেন তারা।
“এভাবে কাজ করার মাধ্যমে আমরা ডেভেলপারদের ধীরে ধীরে বিষয়টি শেখার সুযোগও করে দিচ্ছি। হতে পারে, এরইমধ্যে কিছু ফিচার নিয়ে খুব ভালোভাবে কাজ করছেন তারা। এখন তারা সেসব ফিচার তুলে ধরার সুযোগ ও নতুন বিষয় শিখে আরও ফিচার তৈরি করতে পারবেন।”
নিজেদের ‘ম্যাগনিফায়ার’ অ্যাপটিকে উন্নত করেছে অ্যাপল এবং এবার এটি ম্যাক ওএস-এও চালু হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ান।
অ্যাপটি ব্যবহার করে কেউ চাইলে ম্যাক-এর ক্যামেরা বা সংযোগওয়ালা আইফোন দিয়ে যে কোনও স্ক্রিন বা সাদা বোর্ড, যেমন– ক্লাস বা লেকচারে জুম করে দেখে নিতে পারবেন। এতে থাকবে আলোর উজ্জ্বলতা, রং ও কনট্রাস্ট এবং অন্যান্য সেটিংস পরিবর্তন করার সুবিধা। যাতে টেক্সট বা ছবি আরও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে বলে দাবি অ্যাপলের।
নতুন ব্রেইল ফিচারের মধ্যে রয়েছে ব্রেইল স্ক্রিন ইনপুট বা ব্রেইল ডিভাইস ব্যবহার করে নোট নেওয়ার সুবিধা এবং নেমেথ ব্রেইল কোড ব্যবহার করে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক হিসাব করা। নেমেথ হচ্ছে বিশেষ ধরনের এক ব্রেইল পদ্ধতি, যা মূলত গণিত ও বিজ্ঞান পড়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
নতুন ‘পার্সোনাল ভয়েস’ ফিচারটিও আগের চেয়ে অনেক উন্নত করেছে অ্যাপল। এখন ব্যবহারকারীর কণ্ঠ কেবল ১০টি বাক্যাংশ বললেই তৈরি করা যাবে, যেখানে আগের প্রযুক্তিতে ১৫০টি বাক্যাংশ বলতে হত এবং এর জন্য অপেক্ষা করতে হত পুরো রাত।
অ্যাপল বলেছে, ‘পার্সোনাল ভয়েস’ ফিচারটি ব্যবহারকারীদের ‘কণ্ঠ পাসওয়ার্ড’ দিয়ে সুরক্ষিত থাকবে এবং এটি কেবল ডিভাইসের ভেতরে থাকবে, যদি না কেউ ইচ্ছা করে আইক্লাউডে ব্যাকআপ করে।
আইক্লাউডে গেলে এটি এনক্রিপ্টেড থাকবে অর্থাৎ তথ্য নিরাপদে গোপন রাখা হবে। এতে করে কোনো ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া তার কণ্ঠ ব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।
হেরলিঙ্গার বলেছেন, অ্যাপলের নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অ্যাক্সেসিবিলিটি দলও চিন্তা করছে, কীভাবে এসব এআই প্রযুক্তিকে তাদের ফিচারে কাজে লাগানো যায়।