ইলিশের অন্ত্রের অণুজীবগুলোর গঠন ও বৈচিত্র্য উদ্ঘাটন করে এক অনন্য প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। তারা মনে করেন, সব সময় রোগমুক্ত মাছ হিসেবে ইলিশের যে গৌরব রয়েছে, তার জন্য এ ব্যাকটেরিয়ার অবদান আছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই) এবং যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় বাংলাদেশের ইলিশের অন্ত্রে এ প্রোবায়োটিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। মেটাজিনোমিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়।
গবেষকদের দাবি, উপকারী এ প্রোবায়োটিক বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের মৎস্য চাষে ব্যবহার করা গেলে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বর্তমানে মৎস্য চাষে মাছ রোগমুক্ত রাখতে বিপুল পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়, যা মাছকে রোগমুক্ত রাখলেও জলজ বাস্তুতন্ত্রের অনেক ক্ষতি করে। এ ধরনের উপকারী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার জলজ প্রকৃতিকে সুরক্ষিত রেখে মৎস্য চাষে নতুন বিপ্লব আনতে পারে।
গবেষকরা জানান, সমুদ্র থেকে নদীতে বিচরণকারী ইলিশ কখনও রোগাক্রান্ত হয়েছে, এমন কোনো গবেষণা প্রবন্ধ বা প্রতিবেদন নেই। সুতরাং অত্যাধুনিক মেটাজিনোমিক্স দ্বারা আবিষ্কৃত নতুন প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার শনাক্তকরণ, ইলিশের রোগ প্রতিরোধিতা ও অন্যান্য অনন্য বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। এসব ব্যাকটেরিয়াকে আলাদা করে ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে প্রোবায়োটিক হিসেবে দেশের মৎস্য চাষে ব্যবহারের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল।
গবেষণা দলের প্রধান বশেমুরকৃবির ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (আইজিবিই) অধ্যাপক ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো ড. তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, এ গবেষণায় শনাক্ত প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াগুলোর মধ্যে ল্যাকটোকক্কাস, মরগানেলা, এন্টেরোকক্কাস, অ্যারোমোনাস, শিওয়েনেলা, পেডিওকক্কাস, লিওকোনস্টক, স্যাক্কারোপোরা ও ল্যাকটোব্যাসিলাস উল্লেখযোগ্য। এ প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াগুলো বৈচিত্র্যময় সামুদ্রিক ও নদীর বাস্তুতন্ত্রে বিচরণকারী ইলিশের অনন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, স্বাদ ও ফিটনেসের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।