সময়টা ২০০৭। দেশে জরুরি শাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কয়েকজন সেনাসদস্যের সঙ্গে কয়েকজন ছাত্রের বচসাকে কেন্দ্র করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভূতপূর্ব ছাত্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একনাগাড়ে বন্ধ থাকে ৬৬ দিন। বিক্ষোভের ঘটনায় যে মামলা হয়, তাতে আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক ও বেশ কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই বছরের অক্টোবরের শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আবার খুলে দেওয়া হয়। কয়েক দিনের মাথায় মধুর ক্যানটিনে আসেন কারাগারে আটক এক শিক্ষার্থীর আত্মীয়া। আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের তিনি খুঁজে বের করলেন। শোনালেন, কারাগারে আটক তাঁর আত্মীয়ের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা।
আত্মীয়ার মুখে সহপাঠী নির্যাতনের সেই বর্ণনা শুনে আগস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘নির্যাতনবিরোধী ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ মঞ্চের’ শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেন, যা কপালে থাকুক না কেন, কারাগারে আটক সহপাঠী ও শিক্ষকদের মুক্তির জন্য তাঁরা আন্দোলন শুরু করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর বেশির ভাগই জানিয়ে দিলেন এ ধরনের আন্দোলনের জন্য উপযুক্ত সময় এটা নয়।
তার পরও ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা দিলেন। সেদিনের কর্মসূচি ভয় ও নীরবতা ভেঙে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। এরপর একের পর কর্মসূচিতে আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে, তখনকার সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আটক ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দেন।