প্রথম আলো :
ফকরুল হাসান বৈরাগী : সৈয়দ হাসান ইমাম ভাইয়ের মাধ্যমে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে পরিচয়। আমার জীবনে ঋত্বিক ঘটক একটা দুঃখের অধ্যায়। এটাই আমার জীবনের একটা বড় দুঃখ। কারণ, উনার যে কাজের ধারা, কাজ করতে করতে বোঝার সময়টাই হয়নি। একটা মানুষকে তো বুঝতে সময় লাগে, কাজ করছি হয়ে গেছে—বিষয়টা মোটেও এমন নয়। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির শুটিং একসময় শেষ হয়ে গেল। ভাবলাম যে ওনাকে বলব, আমি বুঝতে পারলাম না, তিনি হয়তো বলবেন, ঠিক আছে পরের ছবিতে কাজ করলে বুঝতে পারবে। আমিও হয়তো ওনার যে গুণ আছে, যোগ্যতা আছে, স্টাইল—সব বুঝতে পারব। ধারণা হবে তাঁর সম্বন্ধে। কিন্তু সেই সুযোগটা আমার জীবনে আর আসেনি। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ শেষ করার পর তিনি কলকাতায় চলে গেলেন। এরপর একটা ছবি করলেন, তার কিছুদিন পর তিনি মারা গেলেন। তাই আমার পক্ষে তাঁর সাহাচার্য পাওয়া আর সম্ভব হয়নি। সেভাবে বিচার–বিশ্লেষণ করার মতো অবস্থা হয়নি। আমার জীবনে এই একটাই আফসোস, এটাই অনুশোচনা। যত দূর মনে পড়ে, শুটিংয়ের শুরুটা হয়েছিল ভৈরবের দিকে, তারপর কাজটা হয়েছে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে। একটা মানুষের সঙ্গে পরিচয় হবে, তাঁর সঙ্গে ভাবের আদান–প্রদান হবে, তারপরই না হয় বৈশিষ্ট্য জানা যাবে। কিন্তু কাজ নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে সেভাবে জানার সুযোগটাই হয়নি। তারপরও বলতে হয়, টেকনিক্যালি তিনি খুবই সাউন্ড এবং তাঁর চোখ দুটো খুবই মারাত্মক ছিল।