ইরানের সঙ্গে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবে নতুন করে আরও সেনাসদস্য এবং সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পেন্টাগনের বরাত দিয়ে শনিবার বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, হুমকি মোকাবিলায় সৌদি আরবে নতুন করে মার্কিন বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। অন্যদিকে একইদিন এনবিএস নিউজ জানিয়েছে, এ প্রক্রিয়া এখন শুরু হয়নি, বরং গত জুন থেকেই দেশটিতে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি রাজা সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ-ও এতে সম্মতি দিয়েছেন।
১৯ জুলাই শুক্রবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে বাড়তি মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাড়তি সামরিক উপস্থিতির অংশ হিসেবে সৌদি আরবের প্রিন্স সুলতান ঘাঁটিতে অত্যাধুনিক মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কথা শোনা যাচ্ছে। এছাড়া সেখানে এফ-২২ জঙ্গিবিমানের একটি স্কোয়াড্রন পাঠানো হতে পারে। থাকছে বাড়তি মার্কিন সেনা সমাবেশ। এরমধ্যেই সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে বৃহস্পতিবার সৌদি আরবে আগে থেকেই মোতায়েন থাকা মার্কিন সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি।

জুনে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন জানিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে এক হাজার সেনা মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাদেরকে ঠিক কোথায় মোতায়েন করা হবে তা তখন জানানো হয়নি। সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সিএনএন আভাস দিয়েছিল, ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও জোরালো করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে দেশটিতে নতুন করে আরও সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াশিংটন। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘আঞ্চলিক হুমকির মুখে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিনের অংশীদারত্বকে জোরালো করছে।’

সম্প্রতি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তর অংশে অবস্থিত প্রিন্স সুলতান বিমান ঘাঁটিতে ৫০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে আগে থেকেই অল্প সংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে। তবে ওই ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাসহ রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিমান ঘাঁটির উন্নয়নের জন্য আরও সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। এছাড়া ওই বিমান ঘাঁটিতে পঞ্চম প্রজন্মের অত্যাধুনিক স্টিল্থ এফ-২২সহ অন্যান্য মডেলের জঙ্গিবিমান উড্ডয়নেরও পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন।

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবে সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এরইমধ্যে দুই দফায় চুক্তি থেকে আংশিক সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। আর ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উগসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী, ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের হুমকি মোকাবিলায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ শুরুর অভিযোগ এনেছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে আসছে ওয়াশিংটন। তেহরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

গত ২০ জুন ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামে একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে ইরানের সেনাবাহিনী। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়। তবে ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশের অভিযোগ নাকচ করে তারা দাবি করেছে,আন্তর্জাতিক সীমার মধ্যে অবৈধভাবে তেহরান তাদের ড্রোন ভূপাতিত করেছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews