উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়

স্বজন রাজনীতি করলে ভোটে কেন নয়– প্রশ্ন শাজাহান খানের

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনকে প্রার্থী না করতে দলীয় সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপি। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক মনে করি না।’

শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান মাদারীপুর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। আসিবুর রহমান খান আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। পাভেলুর রহমান শফিক খান সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। 

তাদের প্রার্থিতা নিয়ে দলের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শাজাহান খানের ছেলের প্রার্থিতা নিয়ে অল্পবিস্তর সমালোচনা হচ্ছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে শাজাহান খানের সঙ্গে কথা বলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। তারা ছেলেকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য শাজাহান খানকে তাগিদ দিয়েছেন। 

মির্জা আজম সমকালকে জানিয়েছেন, মন্ত্রী ও দলের এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। আর স্বজন, অর্থাৎ নিকটাত্মীয় বলতে বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, সহোদর ভাইবোন, ছেলে ও ছেলের স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ের স্বামীকেই বোঝানো হয়েছে। এই হিসেবে শাজাহান খানের নিকটাত্মীয় হলেন তাঁর ছেলে। আর নিকটাত্মীয়দের নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। তাই এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য তিনি (মির্জা আজম) শাজাহান খানের সঙ্গে কথা বলেছেন। 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাজাহান খান সমকালকে বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। ধারাবাহিকভাবে তাঁর পরিবার রাজনীতিতে জড়িয়ে আছে। তাঁর বাবা আসমত আলী খান তিনবারের এমপি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। তাঁর ভাই ওবায়দুর রহমান কালু খান মাদারীপুর সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। তারা চার ভাই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তাঁর ছেলে আসিবুর রহমান খানও সক্রিয় রাজনীতি করছেন। এখন হঠাৎ করে মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনদের নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত হলে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের কী হবে? 

সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। এজন্য তিনি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে দলগতভাবে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। এর আগে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গেও একমত হননি। ফলে ওই নির্বাচনে একশ থেকে দেড়শ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ কারণেই তিনি উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনদের প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক মনে করছেন না।

আগামী ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক বসছে। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনদের অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত কার্যকরে দলের কারও কারও অনীহা নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি রয়েছে। এ প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সামনে ওই বৈঠকে তিনি মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরবেন। দলের সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক অধিকার নষ্ট করছে কিনা কিংবা এতে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে কথা বলবেন। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী বললে ছেলেকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেবেন কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আমি তো নির্বাচন করছি না। আমার ছেলে নির্বাচন করছে। তার সঙ্গে কথা বলতে হবে। কেননা, ছেলে নির্বাচন থেকে সরবে কিনা, সেটা তার সিদ্ধান্ত।’ 



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews