জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা একজোট হতে পারে। কিন্তু রোববার ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দি যোদ্ধাদের মিত্র জোটই পরস্পরের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরল। তেলসমৃদ্ধ কিরকুকে ইরাকি সেনারা ঢোকা শুরু করলে তাদের সঙ্গে কুর্দিদের ওই লড়াইয়ের শুরু।
ইরাকি রাজধানী বাগদাদ ও গুরুত্বপূর্ণ শহর মসুলের মাঝামাঝি কিরকুকের দখল সরকারি বাহিনীর হাতে এখন। কিন্তু ভবিষ্যতে এ শহরই ইরাক ও ব্যাপক পরিসরে মধ্যপ্রাচ্যে সংকট জোরালো করে তুলতে পারে—এমনটাই ধারণা বিশ্লেষকদের।
ইরাকের উত্তরাঞ্চলে স্বাধীন কুর্দিস্তান গঠনে তিন সপ্তাহ আগে এক বিতর্কিত গণভোট আয়োজন করে দেশটির কুর্দি বাহিনী। কিরকুককে নিজেদের শহর বলে দাবি করে তারা। কিন্তু সরকারের পরিকল্পনা ভিন্ন।

সবার নজর কিরকুকের দিকে কেন
ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চল ও দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের দীর্ঘদিনের বিরোধের কেন্দ্র হয়ে রয়েছে কিরকুক। কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ মানা বাধ্যতামূলক নয় এ রকম গণভোট আয়োজনের পর তাদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। শহরটি একটি সমৃদ্ধ তেলখনির ওপর অবস্থিত; যে খনি থেকে দৈনিক প্রায় ৫ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করা সম্ভব।
২০১৪ সালে আইএস যখন কিরকুকের দখল নিতে অগ্রসর হয়, তখন ইরাকি সেনাবাহিনীর পলায়নপর অবস্থা। পরে আইএসকে ঠেকানোর অভিযানে এগিয়ে আসে কুর্দি বাহিনী। একপর্যায়ে তারা সফলভাবে আইএসকে হটিয়ে এ শহর ও এর আশপাশের তেলখনিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। স্বশাসিত কুর্দিস্তান থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরেই এই কিরকুক অবস্থিত। ইরাক সরকার কিরকুক শহর ও তার অন্যান্য প্রদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে আগ্রহী হওয়ার মধ্যেই কুর্দিস্তান কর্তৃপক্ষ গণভোটে কিরকুককেও অন্তর্ভুক্ত করে। আর তখনই কিরকুক নিয়ে বাগদাদের মাথাব্যথা চাড়া দেয়। কুর্দি কর্তৃপক্ষের ওই পদক্ষেপকে উসকানি হিসেবেও দেখে সরকার।
ইরাকি সেনারা কিরকুকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি বলেছেন, তিনি কুর্দি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সেখানকার প্রশাসন ভাগাভাগি করতে চান। সেই সঙ্গে তিনি পেশমার্গা নামে পরিচিত কুর্দি বাহিনীর প্রতি ইরাকের ঐক্যবদ্ধ সামরিক কমান্ডের অধীন কাজ করার আহ্বান জানান।
কিরকুক নিয়ে ইরাকে ফের জাতিগত সংঘাত প্রবল হয়ে ওঠার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। কুর্দি, শিয়া, সুন্নি, খ্রিষ্টান—নানা সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস যে শহরে তার দখল ইরাকি বাহিনী নিয়ে নেওয়ায় এর প্রভাব এখন ইরাক ছাপিয়ে ইরান, তুরস্ক ছাড়াও গোটা মধ্যপ্রাচ্যেই পড়তে পারে। যদিও এ শঙ্কা প্রশমনের চেষ্টায় আবাদি বলেছেন, দেশের প্রভাবশালী ‘শিয়া পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স’ এই শহরে প্রবেশ করবে না’ তথাপি এপির সাংবাদিকেরা জানাচ্ছেন, শহরের পশ্চিমাংশের বিভিন্ন স্থানে ইরানের সমর্থনপুষ্ট তুর্কি মিলিশিয়াদের অবস্থান নিতে দেখেছেন তাঁরা।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews