চট্টগ্রাম বন্দরে ১৭২টি ক্যাটাগরির মধ্যে ১৬৮টিতে ট্যারিফ (মাশুল) বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে গড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ ট্যারিফ বৃদ্ধি পাবে। যার পুরোটাই বহন করতে হবে আমদানি-রপ্তানিকারকদের। পরোক্ষ প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর। বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ট্যারিফ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন কারণে যখন অর্থনীতি চাপের মুখে ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সংকট দেখা দিয়েছে ঠিক তখন ট্যারিফ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসাবে দেখা দেবে।

শনিবার চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, ৩৯ বছর পর ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। এ অনুমোদনের নথি আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে ভেটিংয়ের জন্য। এরপর তা গেজেট আকারে প্রকাশ হবে। গেজেটেই লেখা থাকবে বাড়তি ট্যারিফ আদায় কখন থেকে শুরু হবে।

জানা গেছে, দেশের সমুদ্রসীমায় জাহাজ প্রবেশ করার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) কিছু সেবা দেয়। এ সেবার বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে কিছু মাশুল আদায় করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ মাশুলের আরেক নাম ট্যারিফ। বন্দরের প্রদত্ত সেবার মধ্যে রয়েছে-বাংলাদেশের জলসীমায় একটি জাহাজ আসার পর সেটি বহির্নোঙর থেকে জেটিতে আনার জন্য পাইলট পাঠানো, টাগবোট সার্ভিস, পানি সরবরাহ, ক্রেন চার্জ, জাহাজ ভেড়ানো, জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানো বা উঠানো, পণ্য ডেলিভারি পর্যন্ত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। এসব কার্যক্রম বা সেবার বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে মাশুল আদায় করা হয়। সব ধরনের সেবার বিপরীতে গড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ ট্যারিফ বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মতো কম মূল্যে বিশ্বের আর কোথাও শিপিং সেবা পাওয়া যায় না। বর্তমান সময়ের চাহিদা ও ব্যয়ের সঙ্গে এ পুরোনো ট্যারিফ কাঠামো কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে যুগোপযোগী এবং বাস্তবসম্মত ট্যারিফ কাঠামো গঠন করা হয়েছে।

গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিপিএমইএ পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, পোশাক রপ্তানির ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে এখনো সরে আসেনি যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে সরকার কিছু করতে না পারলে ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে। এতে করে বাংলাদেশের রপ্তানি পোশাক শিল্পে বিপর্যয় নেমে আসবে। এ অর্থনৈতিক বিপর্যয় বাংলাদেশ সামাল দিতে পারবে বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরে সেবার বিপরীতে নতুন করে ট্যারিফ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসাবে দেখা দেবে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খাইরুল আলম সুজন যুগান্তরকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর চাইলে ধাপে ধাপে ট্যারিফ বাড়াতে পারত। একসঙ্গে সব সেবার বিপরীতে ট্যারিফ বৃদ্ধির ধাক্কা ব্যবসায়ীরা সামাল দিতে পারবেন না। প্রায় ৪০ শতাংশ ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে আমদানি-রপ্তানি ব্যয়ও পাল্লা দিয়ে বাড়বে। এর খেসারত দিতে হবে সাধারণ ভোক্তাদের।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews