খাদ্যে ভেজাল মেশানো নতুন কোন বিষয় নয়। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে দিন দিন এই ভেজালের পরিমাণ মহামারী আকার ধারণ করছে। এমন কোন খাদ্যদ্রব্য নেই যেখানে ভেজাল মেশানো হচ্ছে না। অথচ খাদ্য সামগ্রী নিয়ে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীলতা দেখানোর কথা থাকলেও দেশে এর উল্টোটাই লক্ষণীয়। এ অবস্থায় ভেজালবিরোধী কার্যক্রম এখনই জোরদার করা প্রয়োজন।

ভেজাল এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আসল চেনাই দায়। সব জিনিসেই ভেজাল দেওয়া হচ্ছে অধিক মুনফার আশায়। মুড়িতে হাইড্রোজ, ফলমূলে কার্বাইডসহ নানা বিষাক্ত কেমিক্যাল, মাছে ও দুধে ফরমালিন, সবজিতে রাসায়নিক কীটনাশক, জিলাপি-চানাচুরে মবিল, বিস্কুট, আইসক্রিম, কোল্ডড্রিংস, জুস, সেমাই, আচার, নুডলস এবং মিষ্টিতে টেক্সটাইল ও লেদার রং, পানিতে ক্যাডমিয়াম, লেড, ইকোলাই, লবণে সাদা বালু, চায়ে করাতকলের গুঁড়া, গুঁড়া মসলায় ভুসি, কাঠ, বালু, ইটের গুঁড়া ও বিষাক্ত গুঁড়া রং। ফলে কোন খাবারই নিরাপদ নয়।

মুড়ি উৎপাদনে ব্যবহার করা হচ্ছে সোডিয়াম হাইড্রো সালফাইড, যা হাইড্রোজ হিসেবে পরিচিত। এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খাদ্যে মেশালে সেটি যে ক্ষতির কারণ হবে এটা তো বলা বাহুল্য। হাইড্রোজ মেশানোর ফলে মুড়ি ফুলে ফেঁপে উঠে। দেখতে চকচকে এবং বড়সড় হয়। এর ফলে বেশি দামে বিক্রি করা যায়। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা এ কারণে মুড়িতে হাইড্রোজ মেশায়।

বিশেষজ্ঞের মতে, হাইড্রোজ একটি শক্তিশালী ক্ষারীয় পদার্থ। খাদ্যের সঙ্গে এটি পেটে গেলে মানব দেহে রক্তের শ্বেতকণিকা, হিমোগ্লোবিনের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। অথচ মানুষকে নিরুপায় হয়ে হাইড্রোজ মেশানো মুড়ি খেতে হচ্ছে। ভেজাল বন্ধে বিএসটিআই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালায়। এতে ভেজালকারীরা ধরাও পড়ে। যৎসামান্য শাস্তিও হয়। কিন্তু এরপর অবস্থা তথৈবচ। ছোটখাটো অভিযান এবং সামান্য জেল-জরিমানায় যে ভেজালকারীদের লোভের হাঁ করা মুখ বন্ধ করা যাবে না সেটি তো বলাই বাহুল্য। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে খাদ্যে ভেজাল দেয়া এবং ভেজাল খাদ্য বিক্রির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এছাড়া ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা প্রয়োগ করার কোন নজির নেই। এজন্য শাস্তির মেয়াদ এবং পরিমাণ বাড়াতে হবে। তাছাড়া অভিযানও অব্যাহত রাখতে হবে। খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যের মান ও বাজার নিয়ন্ত্রণে ৭টি মন্ত্রণালয় কাজ করে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখানে এক হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এ কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু দিনের পর দিন এই অবস্থা চলতে পারে না। ভেজালের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর অবস্থান নিতে হবে। বিশেষ করে আসন্ন রমজানে রোজাদাররা যাতে ভেজালমুক্ত থাকতে পারেন সেটি নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews