অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, 'খেলাপি ঋণ বাড়ার আর কোনো সুযোগ নেই। এ-সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে ঋণখেলাপিদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। 

মঙ্গলবার বিকেলে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সরকারি মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠকে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের এমডি তাদের কর্মকৌশল তুলে ধরেন। এখন থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর সরকারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংক খাতের জন্য যেসব কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হলে এ খাত আরও শক্তিশালী হবে। ব্যাংকগুলোর আয় বাড়বে। কমবে খেলাপি ঋণ। তিনি বলেন, এখন যেসব আইন আছে সেগুলো খুবই দুর্বল। বিদ্যমান আইনগুলো সংশোধন করে আরও যুগোপযোগী করা হচ্ছে। এজন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। সব আইন যখন কার্যকর হবে, তখন খেলাপি ঋণ কমবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা ঋণ নেবে, তাদের যথাযথ জামানত দিতে হবে। ঋণ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের গ্যারান্টি নেওয়া হবে। যাতে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে আইনিভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, যেসব এলাকায় একাধিক সরকারি ব্যাংকের শাখা আছে, তা অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া যায় কি-না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলো একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে, তবে তা যেন অসুস্থ না হয়। ব্যাংকগুলোর অনিয়ম প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, একের পর এক পণ্য রফতানি হয়েছে, কিন্তু টাকা আসছে না। আবার ঋণপত্র খোলা হলেও যন্ত্রপাতি আসছে না। এসব আর দেখবেন না। এ জন্য ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে। চার ব্যাংকের জন্য একই নিয়ম হবে। দুশ্চিন্তার কিছু থাকবে না। ব্যাংকগুলোর তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, তিন মাস অন্তর সরকারি ব্যাংকগুলোর 'পারফরম্যান্স' মূল্যায়ন করা হবে। কোন ব্যাংকের কত খেলাপি ঋণ কমেছে, আয় কত বাড়ছে- এসব অগ্রগতি রিপোর্টের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের কর্মীদের বোনাসের বিষয়ে আইন হচ্ছে। ব্যাংকের প্রত্যেকের ভূমিকা কী, এর ওপর নির্ভর করবে কে কত বোনাস পাবে। নিজেদের মুনাফা করে বোনাস নিতে হবে। ব্যাংক কমিশন গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, আইন ঠিক করা হচ্ছে। প্রয়োজনে একাধিক কমিশন গঠন করা হবে। অনেক গ্রুপ সরকারি ব্যাংক থেকে সীমার বেশি ঋণ নিয়েছে- এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, একটি গ্রুপ কত ঋণ পাবে, তা নতুন করে নির্ধারণ করা হচ্ছে। ভালো ব্যবসায়ীরা যথাযথ ঋণ পাবেন। অক্টোবরের পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ব্যাংকগুলো ঠিক রাখতে সরকারি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ও হিসাববিদদের পরিচালক করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

দায়িত্ব নেওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, খেলাপি ঋণ আর এক টাকাও বাড়বে না। কিন্তু খেলাপি ঋণ বেড়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে খেলাপি ঋণ আর বাড়বে না। তিনি বলেন, যেখানে যেখানে আইনের পরিবর্তন দরকার, সেখানে পরিবর্তন করা হচ্ছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানান, আগে কী হয়েছে তা জানা নেই। তিনি নতুন অর্থমন্ত্রী। সেজন্য সব আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews