আজ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৭৮তম প্রয়াণ দিবস। বাংলা কবিতার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম এই কিশোর কবি, যিনি মাত্র একুশ বছরের স্বল্পজীবনে রেখে গেছেন অগ্নিগর্ভ সাহিত্যের এক অনন্য ভাণ্ডার।

১৯৪৭ সালের এই দিনেই যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে কলকাতার যাদবপুরে 'রেড অ্যান্ড কিওর হোম'-এ মৃত্যু হয় সুকান্তর। তবে মৃত্যুর বহু আগে থেকেই তাঁর কবিতা বাংলা সাহিত্যে এক নতুন বিপ্লবের সুর বয়ে এনেছিল।

১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটে জন্ম নেওয়া সুকান্ত ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী ছিলেন। স্কুলজীবনে যুক্ত হন কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে। মার্ক্সবাদী ভাবনাকে কেন্দ্র করে তিনি গড়ে তুলেছিলেন এক প্রগতিশীল সাহিত্যধারা, যার প্রতিটি পঙক্তি ছিল শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে এক সরাসরি উচ্চারণ।

‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই’, ‘পূর্বাভাস’, ‘হরতাল’—এইসব কাব্যগ্রন্থে উঠে এসেছে ঔপনিবেশিক শোষণ, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ এবং সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার তীব্র প্রতিবাদ।
তাঁর বিখ্যাত কবিতার পঙক্তি—
“ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়,
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি”—
আজও পাঠকের হৃদয়ে ঝলসে ওঠে অনাহারের অনুপম চিত্ররূপ হিসেবে।

কবিতা শুধু তাঁর কাছে সৌন্দর্য নয়, ছিল প্রতিবাদের অস্ত্র। তিনি লিখেছিলেন—
“আমি কবিতা লিখি না, সমাজের জন্য লড়ি।”
এই বিশ্বাসেই গড়ে তুলেছিলেন সাহসী, সংগ্রামী এক কাব্যভাষা, যা বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ও সামাজিক চেতনায় দারুণভাবে নাড়া দিয়েছিল।

প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আজ কলকাতায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, কবিতাপাঠ কেন্দ্র ও বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সুকান্তর কবিতা আবৃত্তি, স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে তাঁর কালীঘাটস্থ জন্মভবনে ও কবিতায় অমর করে তোলা বালিগঞ্জের অলিগলিতে।

বাংলা কবিতার এই কিশোর বিদ্রোহী মৃত্যুর ৭৮ বছর পরেও জীবন্ত এক অনুপ্রেরণা। আজও যেকোনো অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাইলে সুকান্তকে স্মরণ করতেই হয়—তিনি আমাদের চেতনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছেন।

এসএফ 



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews