বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে দু’ থেকে তিন ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি বেড়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রবল স্রোতের চাপে আগুনমুখা ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর পানি উপচে এবং কোথাও কোথাও ভেঙেপড়া বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। এতে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য-চালিতাবুনিয়া গ্রাম এবং চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা এলাকা প্লাবিত হয়।
উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরের নয়ারচরের গ্রামের বাসিন্দারা জানান, অনেক পরিবারের ঘর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরের মালামালসহ সবকিছু পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত পানির কারণে তারা ঘর ছেড়ে বেড়িবাঁধের ওপর অবস্থান করছে।
স্থানীয়রা জানান, মধ্য-চালিতাবুনিয়ার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে বা উপচে পানি ঢুকে পুরো ইউনিয়ন পানির নিচে চলে যায়। অন্যদিকে চরমোন্তাজের চরআন্ডা এলাকার বহু দিন ধরে ভেঙে থাকা বাঁধ দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে গ্রামটি প্লাবিত হয়। নতুন করে আরো একটি অংশের বাঁধ ভেঙে গেছে বলেও জানান তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা বৃষ্টিপাতের কারণে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়ে। দুপুর ১টার পর ভাটা শুরু হলে পানি নামতে শুরু করলেও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মেলেনি। অনেক ঘরেই দুপুরের রান্নাবান্না বন্ধ ছিল।
প্লাবনের কারণে এলাকার অনেক পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে জানান স্থানীয় মৎস্যচাষীরা।
রাঙ্গাবালী উপজেলা সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে অনেক মৎস্য ঘের ও পুকুরের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব পরে জানা যাবে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব অজিত চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘সকালে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। চালিতাবুনিয়ার মধ্য-চালিতাবুনিয়া ও চরমোন্তাজের চরআন্ডা নতুন করে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপজেলা ওয়্যারলেস অপারেটর নজরুল ইসলাম জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দিনের জোয়ারের পানি নেমে গেলেও রাতের জোয়ারে আবারো পানি উঠে নতুন করে বিপদ তৈরি হতে পারে বলে তারা আশঙ্কায় রয়েছেন।