নারী ফুটবলারদের মানসম্মত জিমনেশিয়াম দরকার



  • জানালেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন

রুমেল খান ॥ ‘জিমনেশিয়ামে গিয়ে ট্রেনিং করার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট একটি বয়স লাগে। বিশেষ করে মেয়েদের বেলায়। এতদিন মারিয়া-তহুরা-মনিকা-কৃষ্ণারা জিম করেনি। তার কারণ তাদের বয়স কম ছিল, ফিজিক্যালি তারা জিম করার উপযোগী ছিল না। এ জন্য জিম করা ছাড়াই তারা অনুর্ধ-১৪, ১৫, ১৬ দলের হয়ে খেলেছে। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখন ওদের বয়স বেড়েছে। ওরা এখন অনুর্ধ-১৮ ও অনুর্ধ-১৯ দলে খেলছে। খেলছে সিনিয়র জাতীয় দলেও। ফলে এখন সময় হয়েছে মেয়েদের জিমনেশিয়ামে গিয়ে জিম করার।’ কথাগুলো গোলাম রব্বানী ছোটনের। ক’দিন এই জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের এই তারকা কোচ লাভ করেন বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির ২০১৮ সালের বর্ষসেরা ফুটবল কোচের পুরস্কার। এর আগেও তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন ২০১৪ এবং ২০১৬ সালে।

তবে ২০১৯ সালের শুরুতে ছোটনের অধীনে জাতীয় মহিলা ফুটবল দল প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির সমন্বয়টা ঠিকমতো হয়নি। প্রত্যাশা ছিল সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার। এ জন্য প্রয়োজন ছিল ফাইনালে ওঠার। কিন্তু ফাইনালে ওঠা তো দূরে থাক, সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে অসহায় আত্মসমপর্ণ করে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলকে। নেপালের বিরাটনগরে বিরাট আশা নিয়ে গিয়েছিলেন সাবিনা-স্বপ্না-মারিয়ারা। সেই আশার বেলুন চুপসে যায় সেমিতে ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে।

সাফে বাংলাদেশের ব্যর্থতার কারণ সবারই জানা। কারণ এই দলে সিনিয়র খেলোয়াড়দের চরম অভাব। বলতে গেলে পুরো দলটিই বয়সভিত্তিক দল। একমাত্র সাবিনা খাতুনই সিনিয়র প্লেয়ার। দলে এক সময় খেললেও এখন আর নেই অম্রাচিং মারমা, সুইন প্রু মারমা, মাইনু মারমা, আসিয়া খাতুন বীথি, মনিকা চাকমা সিনিয়র, জাহানারা আক্তার জানুসহ আরও অনেকে। তাদের জায়গায় যারা খেলছে সেই মনিকা, আঁখি, মারিয়ারা বয়সে অনেক যেমন ছোট, তেমনি অভিজ্ঞতায়ও অনেক পিছিয়ে। এরই প্রভাব পড়েছে জাতীয় দলের খেলায়। তবে আশার কথাÑ প্রাথমিক দলের ক্যাম্পে আবারও ফিরিয়ে আনা হয়েছে সাদিয়া আক্তার এবং লিপি আক্তারকে। লিপি খেলেছিল অনুর্ধ-১৪, অনুর্ধ-১৬ এবং জাতীয় দলে। আর সাদিয়া খেলেছিল অনুর্ধ-১৪ দলে। সাদিয়া তিন এবং লিপি চার বছর পর দলে ফিরল। যাহোক সাফ মিশন শেষে গত ২৮ মার্চ থেকে আবারও অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে লাল-সবুজবাহিনী। তাদের পরবর্তী মিশন ঘরের মাঠে ‘বঙ্গমাতা অনুর্ধ-১৯ নারী আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট’। যেখানে ফেবারিট হিসেবেই খেলতে নামবে তার শিষ্যারাÑ এমনটাই জানিয়েছেন দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ছোটনের পরবর্তী মিশন বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। এখন তার চিন্তা-ভাবনায় আসন্ন এই টুর্নামেন্ট। ছোটন বলেন, যেহেতু অনুর্ধ-১৯ টুর্নামেন্ট। দেশের মাটিতে খেলা দর্শক আমাদের। তাছাড়া বঙ্গমাতার নামে খেলা খুবই গুরুত্ব সহকারে নেয়া হবে। আমরা ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামব। আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই দল।

ছোটনের এমন আত্মবিশ্বাসের কারণ আছে। কেননা সিনিয়র পর্যায়ে তার দল এখনও চূড়ান্ত সাফল্য না পেলেও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোতে কিন্তু দুর্বার। পাঁচটি শিরোপা জিতেছে লাল-সবুজরা ছোটনের অধীনে। এগুলো হলো : এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা চ্যাম্পিয়ন (আঞ্চলিক) আসরে দু’বার (২০১৫ ও ২০১৬), এএফসি অনুর্ধ-১৬ আসরের (২০১৬) আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন একবার, সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে (২০১৭) একবার এবং জকি ক্লাব গার্লস ইন্টাঃ ইয়ুথ ইনভাইটেশনাল ফুটবল টুর্নামেন্টে (২০১৮) একবার। এছাড়া রানার্সআপ হয়েছে সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে (২০১৮) এবং এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে (২০১৯)। সবশেষে ছোটন বলেন, ‘বাংলাদেশ দল এই আসরে শুধু চ্যাম্পিয়ন হবার জন্যই খেলবে না, তারা খেলবে টোটাল ইন্টারটেইনিং ফুটবল। মোট কথা, প্রতিটি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জেতার পাশাপাশি দর্শকদের উপহার দেবার চেষ্টা করবে বিনোদনমূলক ফুটবল। দর্শকরা অবশ্যই তাদের খেলা দেখে আনন্দ পাবেন, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি।’ এখন দেখার বিষয়, ছোটনের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন একটি জিমনেশিয়াম তৈরি করে দিয়ে মারিয়াদের ফিটনেসকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে কি না।





Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews