সমালোচিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশনের মেয়াদ তখন তিন মাস বাকি। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব তুলে ধরলেন। ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে তাঁর ১৩ দফা প্রস্তাব রাজনীতিতে আলোচনার খোরাক জোগায়। কারণ ফেব্রুয়ারিতে ওই কমিশনের মেয়াদ শেষে নতুন কমিশন গঠিত হবে, সেই কমিশনের অধীনেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল।

বিএনপির ওই সংবাদ সম্মেলনের পর প্রথম আলো সিদ্ধান্ত নেয় খ্যাতনামা আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক–উল হকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে এবং তা ওই দিনই। কারণ তিনি তত দিনে জাতির অভিভাবকের ভূমিকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী ছিলেন তিনি। গণমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ হতে থাকে, এর কারণ রাজনৈতিক সংকটে যাঁর যেটুকু দায়দায়িত্ব বা করণীয় তা নিয়ে তখন তিনি কথা বলছিলেন।

ওই পরিস্থিতিতে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন ছিল রাজনীতিতে আলোচিত বিষয়। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় পর খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখায় তা নিয়ে গণমাধ্যমের আগ্রহটা একটু বেশি ছিল। সেই সংবাদ সম্মেলনের সূত্র ধরেই রফিক–উল হকের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সিদ্ধান্ত।

বাসায় যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ফোন করেছিলাম তাঁকে। কিন্তু ফোনে পাইনি। ওনার বৈশিষ্ট্য ছিল, ফোনে সহজেই পাওয়া যেত। আবার যখন ফোন ধরবেন না, তখন সব রকম চেষ্টা করেও লাভ হতো না। এই পরিস্থিতিতে বার্তাকক্ষের ব্যস্ততা ফেলে রওনা হই পল্টনে ওনার বাসায়। বাসায় পৌঁছে নিরাপত্তাকর্মীর কাছে পরিচয় দিই, ভিজিটিং কার্ড পাঠাই। একটু পর তাঁর এক সহকারী এসে জানালেন যে, স্যার টায়ার্ড। একটু আগে বাসায় ঢুকেছেন। দুঃখ প্রকাশ করে পরে যোগাযোগ করতে বলেছেন।

শীতের দিনে এত কষ্ট করে গেছি, আবার অফিস থেকেও সাক্ষাৎকার ছাপার জোর তাগিদ। এত সহজে ফিরব না সিদ্ধান্ত নিই। ওই সহকারীকে বললাম, ‘ওনাকে বলবেন আমি বাইরে অপেক্ষা করছি। উনি ফ্রেশ হলে যেন আমাকে পাঁচ মিনিট সময় দেন।’ সহকারী চলে গেলেন।

অপেক্ষা করতে থাকি ফটকের কাছে। ততক্ষণে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে আলাপ জমিয়ে তুললাম। একপর্যায়ে তিনি বললেন, ‘আপনি দাঁড়ান, আমি ভেতর থেকে ঘুরে আসি।’ আলো-আঁধারি, শীত ও মশার কামড়। এরই মধ্যে নিরাপত্তাকর্মী এসে বললেন, ‘ভেতরে চলেন। তবে স্যারের কিন্তু দেরি হবে।’ যেন হাঁফ ছেড়ে বসলাম। ভেতরে যখন ঢুকতে দিয়েছেন তখন নিশ্চয়ই কথা বলবেন। নিচতলায় বসতে দিলেন। অপেক্ষা করি ডাক পাওয়ার জন্য।

পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে সহকারী আমাকে নিয়ে দোতলায় গেলেন। দোতলাজুড়ে শুধু বই আর বই, যেন জ্ঞানের রাজ্য। প্রথমেই ক্ষমা চাইলাম তাঁর কাছে। বললাম, ‘স্যার, আপনার সাক্ষাৎকার ছাড়া আজ পত্রিকা বের হবে না। সম্পাদক আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।’

‘তুমি তো দেখছি নাছোড়বান্দা। অনেক চেষ্টা করেও না করতে পারলাম না। তো বলো, কী জানতে চাও?’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews