ইউক্রেনে এক পার্লামেন্ট সদস্য ও কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ড্রোনসহ বিভিন্ন যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনার সময় বড় ধরনের ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউক্রেনের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো  শনিবার (২ জুলাই) এই কেলেঙ্কারির তথ্য উদ্ঘাটন করার পরপরই ওই কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন,সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বাজারদরের চেয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দামে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

জেলেনস্কি লেখেন,এক ইউক্রেনীয় এমপি, জেলা ও শহর প্রশাসনের প্রধানরা এবং ন্যাশনাল গার্ডের বেশ কয়েকজন সদস্য এই দুর্নীতিতে জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে।  

জেলেনস্কি আরও লেখেন, ইউক্রেনে দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। সেই সঙ্গে  দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাগুলোর কাজের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।

সম্প্রতি জেলেনস্কির সরকার পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপন করলে তা ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়ে। বিলটিতে ইউক্রেনের জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী ব্যুরো ও বিশেষ দুর্নীতিবিরোধী কৌঁসুলির কার্যালয়ের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ বাতিলের প্রস্তাব করা হয়।

জেলেনস্কির অভিযোগ, এসব সংস্থার ওপর রাশিয়ার প্রভাব আছে এবং তা দূর করতে হবে। তিনি চাইছিলেন, উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতির মামলায় কাকে অভিযুক্ত করা হবে, তা নির্ধারণের ক্ষমতা সাধারণ কৌঁসুলির হাতে দেওয়া হোক।

তবে গত বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বিক্ষোভের পর ইউক্রেনের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরই ড্রোন ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনায় দুর্নীতি কেলেঙ্কারির খবরটি প্রকাশ পায়।

বিলটি উত্থাপনের পর ইউক্রেনে বিক্ষোভ শুরু হয়। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর থেকে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ঘটনা এটি।

জনগণের ক্ষোভ বুঝতে পেরে জেলেনস্কি নতুন একটি বিল উত্থাপন করেন। এতে ওই ব্যুরো ও কার্যালয়কে আগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। আগের বিল পাস হওয়ার মাত্র ৯ দিনের মধ্যে নতুন বিল পার্লামেন্টে পাস হয়।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা শাখার প্রধান কিরিলো বুদানভ ‘জনগণের কথা শোনা’ ও দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর ক্ষমতা নিয়ে ‘ভুল সিদ্ধান্ত না নেওয়ার’ জন্য জেলেনস্কিকে ধন্যবাদ জানান।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত মিত্রদেশগুলোও জেলেনস্কির এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে। আগের বিল নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

২০১৪ সালে ইউরোপীয় কমিশন ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া শর্ত অনুযায়ী ইউক্রেন দুর্নীতিবিরোধী দুই স্বাধীন সংস্থা গঠন করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউক্রেনের ওই দুটি সংস্থা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও খাতে কোটি কোটি ডলারের দুর্নীতির ঘটনায় তদন্ত চালিয়েছে এবং ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে।

২০২৩ সালে এক যৌথ তদন্তের ভিত্তিতে ইউক্রেনের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ভসেভোলোদ কনিয়াজিয়েভের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ ডলারের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর, তাকে গ্রেফতার করা হয়।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews