মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার ইউরো! এই সামান্য অর্থেই জার্মানির আস্ত একটি গ্রাম কিনে নিলেন এক ব্যক্তি! গ্রামটি পাণ্ডুবর্জিতই বলা চলে। গ্রামের বাসিন্দা মাত্র ২০ জন। বেশিরভাগই অবসরপ্রাপ্ত। বয়সের ভারে আর কাজকর্ম করারও ক্ষমতা নেই।
রাজধানী বার্লিন থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম অ্যালউইন। জীবিকার সন্ধানে বেশিরভাগ বাসিন্দাই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বাপ-দাদার ভিটের মায়া কাটাতে পারেননি প্রবীণ বাসিন্দারা। তবে সেই সংখ্যাটা নগণ্য।সংবাদ সংস্থ্যা এএফপি জানিয়েছে, অ্যালইউন গ্রামে এখন থাকেন মাত্র ২০ জন। তাদের রোজগার বলতে কিছুই নেই। চরম দারিদ্র্য আর অবহেলায় দিন কাটে তাদের।সম্প্রতি অ্যালইউন গ্রামটিকে নিলামে তোলা হয়। নিলামের শুরুতে দাম উঠেছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো। তবে তার থেকে সামান্য বেশি দামে মালিকানা বদলে গেল অ্যালউইনের। ১ লাখ ৪০ হাজার ইউরো দিয়ে গ্রামটি কিনে নিলেন অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি। ইউরো চালু হওয়ার আগে জার্মানির মুদ্রা ছিল ডয়েসমার্ক।২০০০ সালে প্রতীকী এক ডয়েসমার্কের মূল্যে এক ব্যক্তির কাছে অ্যালউইন গ্রামটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল।নব্বইয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত কমিউনিস্ট শাসিত সাবেক পূর্ব জার্মানির অন্তর্ভুক্ত ছিল অ্যালউইন গ্রাম। তখন গ্রামের অর্থিক সমৃদ্ধি ছিল যথেষ্টই। অ্যালউইন গ্রামের কাছেই ছিল একটি ইটভাটা। ইটভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন গ্রামের বাসিন্দারা। প্রত্যেক পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ছিল।কিন্তু ১৯৯০ সালে দুই জার্মানি এক হয়ে যাওয়ার পরই, ধীরে ধীরে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যেতে থাকে অ্যালউইন। ইটভাটাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীর রুটি-রুজিতে টান পড়ে। জীবিকার সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিতে শুরু করেন বাসিন্দারা। এভাবে এক সময়ে কার্যত জনহীন হয়ে পড়ে একদা সমৃদ্ধিশালী গ্রামটি।এখন সাকল্যে ২০ বাসিন্দা নিয়ে কোনোমতে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন অ্যালউইন।জার্মানি সরকারও গ্রামের উন্নয়নে সেভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ।
