এই ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বন্দর ও অবকাঠামো খাতে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে সরকার আশা করছে।

রোববার দুবাইয়ে বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় সম্মেলনে এসব প্রকল্প ও বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে আরব আমিরাতের ব্যবসায়ীদের আলোচনা হয়।

নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে উপস্থিত থাকবেন। জানা গেছে, দুবাইয়ের কনরাড হোটেলে আজ বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অনুষ্ঠিত হবে।

সালমান এফ রহমান এই সম্মেলনে ২০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। সেখানে তার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক কয়েকটি বড় ব্যবসায়ী গ্রুপেরও আলোচনা হয়, যারা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্ক গড়ে তোলার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। 

গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় বাংলাদেশে একটি বন্দর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, এলএনজি টার্মিনাল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা রয়েছে আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের।

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে বাংলাদেশ সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাই-টেক পার্ক গড়ে তুলছে। গত এক বছরে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৮ শতাংশ বেড়ে ৩.৬১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের (বিএইচটিপিএ) প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামে নতুন ২৫টি বিনিয়োগ প্রকল্প উপস্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে এসব প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে সেখানে বিনিয়োগকারীদের আলোচনা হয়।

সালমান এফ রহমানকে উদ্ধৃত করে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখে আমি অত্যন্ত খুশি।

“আমরা চীন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় আকারের বিনিয়োগ পেয়েছি। এখন আমরা বিশ্বাস করি, জিসিসিভুক্ত (উপসাগরীয়) দেশগুলো, বিশেষ করে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের উচিত বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে স্বল্প খরচে ভালো লাভের সুযোগ নেওয়া।”

 প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, “উপসাগরীয় দেশগুলো এবং আরব বিশ্বের বিনিয়োগ পেলে তা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে এবং আমরা তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।

তিনশর বেশি সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের গতি বাড়াতে আয়োজিত দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেন।

বাংলাদেশিরা আমিরাতের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। প্রবাসী বাংলাদেশিদের মালিকানায় বা পরিচালনায় বর্তমানে সেখানে ৫০ হাজারের বেশি ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

প্রত্যাশা অনুযায়ী ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বাংলাদেশেরও প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন যা কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।

এক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জিসিসিভুক্ত দেশগুলো হতে পারে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বড় উৎস।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত আমাদের সস্তা শ্রম ও স্বল্প পরিচালন ব্যয় থেকে লাভবান হতে পারে।

“সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিনিয়োগকারী বন্ধুরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান সুযোগ নিয়ে লাভবান হতে পারে।”

তিনি বলেন, “আগামী বছরগুলোতে আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশাল কর্পোরেট কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাব, যেন এই খাত থেকে বিনিয়োগের সুযোগ বের করা যায় এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়।”

 বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের সদস্য, বিনিয়োগ পরামর্শদাতা শেখ আব্দুল কারিম বলেন, “একটি বেসরকারি পরামর্শক দল হিসেবে বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরাম বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে সদা প্রস্তুত। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দূরত্ব ঘোচাতেও ফোরাম সহায়তা দিতে চায়।”



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews