মিডিয়ার আনুকূল্য না পাওয়া বিএনপির জন্য দুর্ভাগ্য, নাকি দলটির উদাসীনতার ফল, এ প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। দলটি সরকারে বা বিরোধীদলে থাকলেও মিডিয়ার তেমন আনুকূল্য পায় না। অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বরাবরই মিডিয়ার সমর্থন পেয়েছে। বিগত দেড় যুগ ধরে বিরোধীদলে থেকে বিএনপি যেভাবে মিডিয়া ট্রায়াল ও বিদ্বেষের শিকার হয়েছে, তা দেশের ইতিহাসে তো বটেই বিশ্বেও বিরল। অথচ আওয়ামী লীগ শত খারাপ করলেও বেশিরভাগ মিডিয়া তাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়ায়, একমাত্র আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল, তাই তার কোনো দোষ নেই। এই একচোখা নীতি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বহু সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী আওয়ামীবন্ধনা করে গেছে। অথচ মিডিয়ার উপর চরম আঘাতটি হেনেছিল শেখ মুজিবুর রহমান। ’৭৫ সালে সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি পত্রিকা ছাড়া বাদবাকি পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষক, সম্মুখযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সকল রাজনৈতিক দলকে মুক্ত করার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম মুক্ত করে অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগ করে দিলেও খুব কম মিডিয়া জিয়াউর রহমানের এই উদারতা তুলে ধরেছে। বরং জিয়াউর রহমানকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলার জন্য ব্যাপক সমালোচনা করেছে। সমালোচনা করুক, তাতে সমস্যা নেই, তবে তাঁর যতটুকু কৃতিত্ব, ততটুকু তো দেয়া উচিৎ ছিল। তা তারা দেয়নি। বরং জিয়াউর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি’র দোষ-ত্রুটি এবং বদনামনির্ভর সংবাদ প্রকাশ করে গেছে। এ নিয়ে জিয়াউর রহমান ও বিএনপি কখনো আক্ষেপ করেছে বলে মনে হয় না। সবচেয়ে বড় কথা, মিডিয়ার বিরূপ ও নেতিবাচক আচরণের পরও বিএনপির শাসনামলে কোনো অজুহাতে পত্রিকা বা টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের তেমন নজির নেই। আমরা দেখেছি, বিগত দেড় দশক ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের তেলবাজ মিডিয়া ও তথাকথিত একচোখা বুদ্ধিজীবী কীভাবে জিয়াউর রহমান ও বিএনপিকে খাটো করে অনবরত কথা বলেছে। তারা আওয়ামী লীগের পেইড এজেন্ট হয়ে টেলিভিশন টক শো ও পত্রপত্রিকায় কথা বলেছে ও লিখেছে। জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী মিডিয়ার ভয়াবহ অপপ্রচার সত্ত্বেও প্রবল জন¯্রােতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ভেসে যাওয়ার পর আশা করা হয়েছিল, যেসব পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেল ফ্যাসিস্টের পক্ষাবলম্বন করে গোয়েবলসীয় প্রচারযন্ত্রে পরিণত হয়েছিল, সেগুলোর পরিবর্তন আসবে। তার কিছুই হয়নি। বরং সব চ্যানেলে আওয়ামী গোয়েবলসরা ঠিকই রয়ে গেছে। তারা কৌশল বদলে চুপ থাকছে। সুযোগ পেলে যেকোনো ঘটনাকে বড় করে দেখিয়ে বিএনপির পিন্ডি চটকাচ্ছে। দলটির সংবাদ যতটুকু প্রকাশ না করলেই নয়, দায়সারাভাবে ততটুকু প্রকাশ করছে। আগে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কথা বলতে দেরি হতো, এসব গোয়েবলস সংবাদ প্রকাশ করতে দেরি করত না। যতটুকু না বলেছে বা করেছে, তার চেয়ে শত গুণ বাড়িয়ে মহিমান্বিত করে প্রচার করত। আলাদাভাবে অনুষ্ঠান করে গুণগান গাইত। বলছি না, গণমাধ্যমকে জিয়াউর রহমান বা বিএনপির গুণগান গাইতে হবে। তবে বিগত দেড় দশক ধরে এই মিডিয়া আওয়ামী গোলামে পরিণত হয়ে যেভাবে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানের চর হিসেবে প্রচার করেছে, তাঁর প্রতি যে অন্যায় করেছে, তার অবদান তুলে ধরে তার দায় শোধ করার উদ্যোগ তো এখন নিতে পারত। তা কি তারা করেছে বা করছে? করছে না।

দুই.

ইদানিং গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউবসহ সকল প্রচার মাধ্যমে বিএনপির ব্যাপক বদনাম ও সমালোচনা করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার পুরধা জিয়াউর রহমানকে তুলে ধরা বা বিএনপির অনুকূলে কথা বলার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো মিডিয়া নেই। বরং বিএনপিকে তুলোধুনো করার মতো অসংখ্য মিডিয়া সক্রিয় রয়েছে এবং নতুন নতুন মাধ্যম গজিয়ে উঠেছে। এমনকি, বিএনপির নিজস্ব যে মিডিয়া সেল রয়েছে, সেটাও কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। জাতীয়তাবাদী ধারার সাংবাদিকরা অভিযোগ করে বলছেন, বিএনপির মিডিয়া সেলে এমন লোকজন রয়েছেন, যাদের মিডিয়া সম্পর্কিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বলতে কিছু নেই, থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। এটা আলোচিত হচ্ছে, বিএনপি ঠিকমতো তার মিডিয়া সেলটিই গড়ে তুলতে পারেনি। কেবল দলের প্রেস রিলিজ, কোন নেতা কি বলেছে, কে কার সাথে দেখা করেছে, এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং দলের দর্শন, ভিশন-মিশন, পলিসি যে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি তুলে ধরে দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পাল্টা জবাব দেয়া দরকার, তার কোনো উদ্যোগ নেই বললে চলে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যম ব্যবহার করে দলের ইতিবাচক ভাবমর্যাদা তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার কোনো চিন্তার প্রতিফলন দেখা যায় না। অথচ এই নতুন প্রজন্মই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হার-জিতের প্রধান নিয়ামক হয়ে উঠবে। বিষয়টি বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ভাবছেন বলে মনে হয় না। গত মাসে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ইনকিলাব অফিসে সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। তিনি অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেল ও সংবাদপত্র অফিসেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছেন। কথায় কথায় তিনি তার সৌজন্য সাক্ষাতের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, অনেক মিডিয়ায় এখনো ফ্যাসিস্টের পক্ষের লোকজন বসে আছেন। তার এই কথার সত্যতা রয়েছে। গত সপ্তাহে একটি চ্যানেলে চিফ নিউজ এডিটর পদে কর্মরত আমার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। চ্যানেলটিতে গিয়ে দেখি, এখনো সেখানে ফ্যাসিজমের পক্ষের লোকজন বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই তারাই যেভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার গুণগান গেয়েছে, এখন তারা চুপচাপ কাজ করছে এবং পেশাদারিত্ব দেখাচ্ছে। বুঝতে অসুবিধা হয় না, সুযোগ পেলেই তারা বিএনপির পিন্ডি চটকাতে দেরি করবে না। সেখানে শুধু ফ্যাসিস্টের পক্ষের শক্তিই নয়, একটি ইসলামী দলের ঘোর সমর্থক সাংবাদিকও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বন্ধুকে জিজ্ঞেস করতেই বলল, দলটির নেতারা কর্তৃপক্ষকে ফোন করে প্রভাব খাটিয়ে তাদের লোকজন ঢুকিয়েছে। শুধু আমাদের চ্যানেলেই নয়, অন্যান্য চ্যানেল ও পত্রপত্রিকায়ও ব্যাপকভাবে দলটির অনুসারীদের ঢুকিয়েছে। বন্ধুর এই তথ্য সাংবাদিক মহলের সবাই জানে। শুধু মনে হলো, তাহলে মিডিয়ায় জাতীয়তাবাদী শক্তি, তথা বিএনপির লোকজন কোথায়? ইসলামী দলটি শুধু মিডিয়া নয়, সরকার, প্রশাসনসহ সর্বত্রই প্রভাব বিস্তার করে তার অনুসারী লোকজন বসিয়ে দিয়েছে। তাহলে কি দাঁড়াল? প্রশাসন ও মিডিয়ার মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভে বিএনপি বা জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষের লোকজন লাপাত্তা হয়ে রয়েছে। থাকলেও নীরব ও নিস্ক্রিয়। প্রেসক্লাবে গেলে এখনো দেখি, জাতীয়তাবাদী মনস্ক অনেক সাংবাদিক, যারা বিগত দেড় দশক ধরে কোথাও চাকরি-বাকরি পাননি, তারা বেকারই রয়ে গেছেন। কোথাও তাদের ঠাঁই হচ্ছে না। বরং সম্প্রতি জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির সম্মেলনে এক অখ্যাত সাংবাদিককে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া নিয়ে চরম সমালোচনা হয়েছে। সমালোচনার বিষয় হচ্ছে, ওই সাংবাদিককে তেমন কেউ চেনেন না এবং যারা চেনেন তারা বলেছেন, তিনি বাম ঘরানার। তাকে নিয়ে যখন সাংবাদিক মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়, তখন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উক্ত সাংবাদিকের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন। এতে পুরো জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক মহল বিস্মিত হয়েছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন, এই একটি উদাহরণ থেকেই বোঝা যায়, বিএনপি আজও জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক কারা, তা চিনতে পারেনি। এই না চেনার খেসারতই দলটি দিয়ে আসছে। তাহলে, দলটি মিডিয়া ট্রায়াল হোক বা মিডিয়া ক্যু হোক, কীভাবে সামাল দেবে! এটা বিএনপির দুর্ভাগ্য না, ইচ্ছাকৃত ভুল।

তিন.

আগামী নির্বাচনে যে গণমাধ্যম থেকে শুরু করে ভার্চুয়াল জগতের প্রচার-প্রচারণা নির্বাচনের ফলাফল অনুকূল ও প্রতিকূল করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, বিএনপির নীতিনির্ধারকরা এই মাধ্যমের গুরুত্ব বুঝতে পারছে কিনা? উত্তর হচ্ছে, না। যদি বুঝত, তাহলে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়েই সে এই মাধ্যমগুলোকে কীভাবে নিজের অনুকূলে নেয়া যায়, এ পরিকল্পনা করত। কাদের, কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে মাস্টার প্ল্যান করত। তা না করার ফলে, দলটির বিরুদ্ধবাদীরা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে তার ছোটখাটো ঘটনাকে বড় করে দেখিয়ে ঝড় তুলে দিচ্ছে। নানা নেতিবাচক তকমা লাগিয়ে দিচ্ছে। আর এগুলো দেখে ও শুনে দলটির নেতাদের পাল্টা বিবৃতি বা বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। এতে দলটি উল্টো বদনামের শিকার হচ্ছে। তার বিরুদ্ধবাদীরা নেতিবাচক প্রচারণা করবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে তার পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য তারও তো প্রচার বাহিনী থাকা দরকার। এ কাজটি কি তারা করতে পেরেছে? পারেনি। কেবল যারা সমালোচনা করছে, নেতারা তার জবাব দিতে গিয়ে উল্টো বদনামের ভাগিদার হচ্ছে। এসব সমালোচনার জবাব কীভাবে দেয়া যায় বা পাল্টা কি পদক্ষেপ নেয়া যায়, দলটির মিডিয়া সেল আজও তা করতে পারেনি। তাহলে, এই সেলের কাজ কি? আগামী নির্বাচনের প্রচার যে ভার্চুয়াল বা সাইবার যুদ্ধে পরিণত হবে এবং ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত দেশের ১৩ কোটি মানুষ যে তা দেখবে, সেটা কি তারা উপলব্ধি করতে পারছে? তাদের কি সেই উদ্যোগ ও প্রস্তুতি আছে? নেই। ফলে প্রতিপক্ষ তাদের নিয়ে যে গোয়েবলসীয় প্রচারণা চালিয়ে ছেলেখেলার ঝড় তুলবে, সেই ঝড়ে যদি দলটি মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশনের শিকার হয়ে এলোমেলো হয়ে যায়, তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। একদিকে ভার্চুয়াল যুদ্ধ, আরেক দিকে গণমাধ্যমের প্রচারণা, এ বিষয়ে দলটির কোনো চিন্তাভাবনা বা পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। অথচ দলটির প্রতিপক্ষ এই দুই ক্ষেত্রেই তার চেয়ে বহু গুণে এগিয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে সকল গণমাধ্যম এবং ভার্চুয়াল জগতের মধ্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং তার দর্শন, জাতীয়তাবাদ, ভারতের আধিপত্যবাদবিরোধী ভূমিকা সর্বোপরি বিএনপির পক্ষে যদি কোনো গণমাধ্যম থেকে থাকে, তা একমাত্র ইনকিলাব। তার অর্থ এই নয়, এটি বিএনপির মুখপাত্র। ইনকিলাবের দর্শনের সাথে জিয়াউর রহমানের দর্শনের মিল রয়েছে বলেই তার পক্ষে ইনকিলাব কথা বলছে। আবার বিএনপি ভুল করলে, জিয়াউর রহমানের আদর্শ পরিপন্থী কাজ ও ভারতের তোষামোদীর দিকে ঝুঁকে পড়লে ইনকিলাব সোচ্চার ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে দলটির তীব্র সমালোচনা করতেও দ্বিধা করে না। বিএনপি ভালো করলে ভালো বলছে, খারাপ করলে খারাপ বলছে। বিএনপির পক্ষে ভান করা তথাকথিত পত্রিকা বা টেলিভিশনের মতো ইনকিলাব আচরণ করে না। এ সময়ে ইনকিলাবের দিকে দৃষ্টি দিলে সকলেই দেখতে পাবেন, ইনকিলাব প্রতিটি সংবাদ, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, মন্তব্য প্রতিবেদনের যে অন্তর্নিহিত ভাব ও চিন্তা থাকে, তা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দিক নির্দেশ করে এবং তা বিএনপির পক্ষেই যায়। অন্যকোনো পত্রিকার ক্ষেত্রে, সেখানে যতই জাতীয়তাবাদী দাবিদাররা বসে থাকুক না কেন, তাদের টিভি চ্যানেল বা পত্রিকায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পক্ষে কোনো দিক নির্দেশনামূলক প্রতিবেদন, নিবন্ধ, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় ও চিন্তার প্রকাশ থাকে না। বলা যায়, ইনকিলাব একাই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, ইসলামী চিন্তা ও মূল্যবোধের পক্ষে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিরামহীনভাবে বলে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচন দ্রুত হওয়া নিয়ে এবং নানা ইস্যু তুলে তা পিছিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে একমাত্র ইনকিলাব ধারাবাহিকভাবে কথা বলছে, যা বিএনপির পক্ষেই যাচ্ছে।

চার.

গণমাধ্যম হোক, আর ভার্চুয়াল প্রচার মাধ্যম হোক, বিএনপিকে সময় থাকতেই এদিকে মনোযোগ দেয়া জরুরি। গণমাধ্যমে কীভাবে তার নীতি-আদর্শ এবং মিশন-ভিশন তুলে ধরা যায়, এ পদক্ষেপ নিতে হবে। ভার্চুয়াল এবং পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেল মিডিয়ায় নিজস্ব বলয় তৈরি করে দলের প্রচার-প্রচারণার কৌশল অবলম্বন করা দলটির জন্য অপরিহার্য। এসব ক্ষেত্রে, জাতীয়তাবাদী ধারার সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও চিন্তকদের যুক্ত করতে হবে। ইতোমধ্যে, আগামী নির্বাচনে যেসব দল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে, তারা সকল মিডিয়ায় বিএনপিবিরোধী প্রচারণায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিএনপিকে ভোট দিলে কী ক্ষতি, তাদের নির্বাচিত করলে কী উপকার হবে, তা তথ্য তুলে ধরছে। তাদের এসব নেতিবাচক জবাব দেয়া এবং বিএনপির পক্ষে কথা বলার মতো, গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ও ব্যক্তি খুব কম। বিএনপি যদি এখন থেকেই মিডিয়াকে তার অনুকূলে রাখার কৌশল অবলম্বন না করে, তাহলে তা দলটির জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনবে।

[email protected]



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews