পাকিস্তানের সাদা বলের কোচ হিসেবে খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি গ্যারি কারস্টেন অধ্যায়। অবশেষে অল্প সময়ের বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, শুরু থেকেই নিজেকে কোণঠাসা অনুভব করেছেন তিনি। বিশৃঙ্খল ব্যবস্থায় কার্যকর কোনও পরিবর্তন আনার সুযোগ-ই পাননি।

উইজডেন ক্রিকেটের পেট্রিয়ন পডকাস্টে কথা বলতে গিয়ে কারস্টেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) অভ্যন্তরীণ জটিলতা তুলে ধরেন, যা তাকে কয়েক মাসের মধ্যেই পদত্যাগে বাধ্য করে। ২০২৪ সালের এপ্রিলে ব্যাপক আলোচনার মধ্য দিয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় জেসন গিলেস্পিকেও টেস্ট দলের কোচ হিসেবে আনা হয়েছিল। কিন্তু খুব দ্রুতই কারস্টেন বুঝে যান, পিসিবির কাঠামোর ভেতরে তার কর্তৃত্ব খুব সীমিত। তিনি বলেছেন, ‘ক্রিকেট দল পরিচালনা করতে হবে ক্রিকেট জ্ঞানসম্পন্ন মানুষদের দিয়ে। আমাকে নির্বাচক প্যানেল থেকে বাদ দেওয়া হলো এবং এমন একটি দল হাতে তুলে দেওয়া হলো যার গঠনে আমি কোনও ভূমিকা রাখিনি— তখনই ইতিবাচক প্রভাব ফেলাটা কঠিন হয়ে যায়।’

কারস্টেনের এই বক্তব্য পাকিস্তান ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের প্রশাসনগত সমস্যাগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে, বিশেষ করে দায়িত্বের অস্পষ্ট বিভাজন এবং কোচদের স্বাধীনতার অভাবের দিকে। যদিও পিসিবি কারস্টেন ও গিলেস্পিকে নিয়ে একটি পেশাদার কাঠামো গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। 

২০২৪ সালের অক্টোবরেই পদত্যাগ করেন কারস্টেন। তার একদিন আগেই অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের সাদা বলের সফরের জন্য দল ঘোষণা করে পিসিবি। যেখানে কারস্টেন বা গিলেস্পির কেউই দল নির্বাচনে যুক্ত ছিলেন না। বিদেশি কোচদের এইরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত থেকে বাদ দেওয়াই তাদের ক্ষমতা খর্ব হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। কারস্টেন বলছিলেন, ‘এটা ছিল খুবই ঝঞ্ঝাটপূর্ণ কিছু মাস। খুব দ্রুত বুঝে গিয়েছিলাম, আমি কোনও প্রভাব ফেলতে পারবো না। যখন বাইরের চাপ অনেক বেশি হয় এবং সেই চাপটি প্রভাবশালী— তখন দলকে সঠিক পথে চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

তার কিছু সপ্তাহ পর গিলেস্পিও পদত্যাগ করেন। সেটা ছিল পাকিস্তানের ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে। তার পদত্যাগের পেছনে ছিল হাইপারফরম্যান্স কোচ টিম নিলসনকে বিতর্কিতভাবে অপসারণ— যা তার ভাষায় ছিল “একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা”।

তবে হতাশাজনক অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের প্রশংসা করেছেন কারস্টেন। তিনি তাদের “উদ্দীপ্ত ও চাপে থাকা পেশাদার” হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, সুযোগ পেলে আবারও সেখানে ফিরতে চান— তবে সঠিক পরিবেশে। তার ভাষায়, ‘যদি আগামীকাল আমাকে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, আমি যাবো— তবে খেলোয়াড়দের জন্য, আর সঠিক পরিবেশে। আমি পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ভালোবাসি, ওরা দারুণ মানুষ। অন্য যেকোনও দলের চেয়ে ওরা পারফরম্যান্সের চাপ বেশি অনুভব করে। হারলে ব্যাপারটা খুবই তীব্র হয়ে যায়— আর ওরা সেটা গভীরভাবে অনুভব করে।’

কারস্টেনের বিদায়ের পর অস্থায়ীভাবে সাবেক পেসার আকিব জাভেদ দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০২৫ সালের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাইক হেসনকে স্থায়ীভাবে সাদা বলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় পিসিবি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews