ব্যাংকের সিএসআর ব্যয়ে রেকর্ড পিছিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত



অর্থনৈতিক রিপোর্টার

| প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম





করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমে গত বছর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ৭৪৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এ খাতে এ ব্যয় আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং এর আগের বছরের (২০১৬ সাল) তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে জলবায়ু ঝুঁকি তহবিল খাতের আওতাভুক্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে। এ খাতে ব্যয় কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে পিছিয়ে রয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে, সার্বিক ব্যাংকিং খাতে রেকর্ড পরিমাণ সিএসআর ব্যয় বাড়লেও বেশ কয়েকটি ব্যাংক এ কার্যক্রমে কোনো অর্থই ব্যয় করেনি। আবার কিছু ব্যাংকের অর্থ ব্যয় পরিস্থিতি ছিল খুবই নগণ্য। এছাড়া খাতভিত্তিক অর্থ ব্যয়ের দিক থেকেও অনেক ব্যাংকের চিত্র ছিল হতাশাজনক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সিএসআর কার্যক্রমে যে ব্যাংক যত অবদান রাখবে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিংয়ে বিবেচনায় নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এ উপলব্ধি থেকেই ব্যাংকগুলো বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় সিএসআর কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করে থাকে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মুনাফার যে অংশ সামাজিক কাজে ব্যয় করার জন্য রাখে, সেটাই সিএসআর নামে পরিচিত।
২০০৮ সালে সিএসআর কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকেই ব্যাংকগুলো মুনাফার একটি অংশ সিএসআর খাতে ব্যয় করছে। তবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এ বিষয়ে বিশদ নীতিমালা জারি করা হয়। এতে খাতওয়ারি ব্যয়ের সীমা নির্ধারণসহ জঙ্গি ও সন্ত্রাস সহায়ক কাজে সিএসআরের অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলা হয়। একইসঙ্গে যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মুনাফায় নেই তাদের নতুনভাবে সিএসআর থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময়ে সরকারি-বেসরকারি খাতের অন্তত সাতটি ব্যাংক সিএসআর খাতে কোনো অর্থ ব্যয় করেনি। এছাড়া দেশি ও বিদেশি খাতের আরও নয়টি ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় ছিল অতি নগণ্য। আগের ষান্মাসিকেও সিএসআর খাতে কোনো অর্থ ব্যয় না করা ব্যাংকের সংখ্যা ছিল ৬টি। আর অতি নগণ্য সিএসআর ব্যয় করা ব্যাংকের সংখ্যা ছিল আটটি। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে স্মরণকালের তীব্র শীত বিরাজমান থাকায় জনগণের কষ্ট নিবারণে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্দেশ্যে ব্যাংকগুলো নিজস্ব উদ্যোগে ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান দিয়েছে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যাদুর্গত অঞ্চলে সহায়তা ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ায়ও এ খাতে সিএসআর ব্যয় বেড়েছে।
ব্যাংকগুলোর সার্বিক সিএসআর ব্যয়: আট বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় করেছে। এর পরিমাণ ৭৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রথম ষান্মাসিকে ৩২৬ কোটি ২২ লাখ ও দ্বিতীয় ষান্মাসিকে ৪১৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় করে। ২০১৬ সালে ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে মোট অর্থ ব্যয় করেছিল ৪৯৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রথম ষান্মাসিকে ২১৫ কোটি ১৬ লাখ ও দ্বিতীয় ষান্মাসিকে ২৮১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছিল। এছড়া ২০১৫ সালে ৫২৭ কোটি ৮১ লাখ, ২০১৪ সালে ছিল ৫১০ কোটি ৫৫ লাখ, ২০১৩ সালে ৪৪৭ কোটি, ২০১২ সালে ৩০৪ কোটি, ২০১১ সালে ২১৮ কোটি ও ২০১০ সালে ২৩৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল ব্যাংকগুলো।





Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews