সিবিএ নেতার বাধার মুখে স্থগিত হয়ে গেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়োগ পরীক্ষা। এ ঘটনায় দায়ী বন্দর কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদকসহ দুই নেতাকে আসামি করে মামলা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ওই নেতারা পরীক্ষা চলাকালীন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর ফারুক হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করে তাদের গাড়ির চাবি আটকে রাখে। পরে নৌবাহিনীর সহযোগিতায় তারা বন্দর এলাকা ত্যাগ করেন। শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে এসব ঘটনা ঘটলেও রাত পৌনে ১১ টার দিকে বন্দরের চেয়ারম্যান দফতরের সূত্রে বিস্তারিত জানানো হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওহিউদ্দিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ১১ টায় খুলনার নৌবাহিনী স্কুলে ৯টি ক্যাটাগরিতে ৪০টি নিয়োগ পদের লিখিত পরীক্ষা চলছিল। এসময় ৩টি ধাপের প্রথম ধাপের পরীক্ষায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণায় মোংলা বন্দর কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) নেতাদের মনোনিতরা কৃতকার্য না হওয়ায় তারা পরের ধাপের বন্ধ করতে নানা রকম হুমকি ধামকি দেয়। একপর্যায়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টু ও কার্যকরী সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী পরীক্ষা বন্ধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর ফারুক হাসান, পরিচালক প্রশাসন প্রনব কুমার রায়, নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) আফসানা ইয়াসমিন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব নজরুল ইসলাম, বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওহিউদ্দিন চৌধুরী, যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভিাগের প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান শাহ চৌধুরী ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আব্দুল আলীমকে লাঞ্ছিত করে তাদের গাড়ির চাবি আটকে রাখে। এসময় পরীক্ষা কেন্দ্র ভাঙচুর করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে ঘটনাস্থলে নৌবাহিনীর সদস্যদের খবর দিলে তাদের গাড়িতে করে ওইসব কর্মকর্তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ব্যবস্থাপক (কর্ম) সালাউদ্দিন কবির বাদী হয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টু ও কার্যকরী সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে আসামি করে খুলনার খালিশপুর থানায় মামলা করেন।’
এদিকে অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টুর কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় বন্দরের ইতিহাসে লিখিত পরীক্ষায় কোনওদিন কঠিন প্রশ্ন করা হয়নি, এবারের যে প্রশ্ন করা হয়েছে তাতে অনেকেই উন্নীত হতে না পারায় আমি প্রতিবাদ করে পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেছি। তবে কোনও পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি।’
বন্দর সূত্র জানায়, পাম্প ড্রাইভার পদে ৫ জন, গাড়ির ড্রাইভার পদে ৮ জন, গ্রিজার কাম পাম্প ড্রাইভার ২ জন, কার্য সহকারী পদে ২ জন, জাহাজের প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার পদে ২ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ড্রাইভার পদে ৩ জন ও ফেরম্যান পদে ১ জনসহ মোট ৪০ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষার কথা ছিল। কিন্তু সিবিএ নেতাদের বাধার মুখে তা স্থাগিত করা হয়েছে।