বর্তমান বিশ্বে খুব প্রচলিত একটি শব্দ ‘এআই’ (AI)। তবে শব্দটি যতটা ছোট, এর গভীরতা ততটাই বেশি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial intelligence) যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো এআই (AI)। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যা তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে যন্ত্র বা অ্যাপ্লিকেশনকে মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তির আদলে কাজের উপযোগী করে তোলে।

‘এআই’ মানুষের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সব কাজেই এআই সাহায্য করতে পারবে। রান্নার রেসিপি কিংবা চাকরির সিভি সবই লিখে দিতে পারবে এআই। এআই ইন্টেলিজেন্সি রোবট দিয়ে এখন কত কিছুই না করা হচ্ছে। নিউজ প্রেজেন্টার থেকে শুরু করে স্কুলে পড়ানো, অফিসের কাজ সবই।



সেই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত চাইল্ড হেল্পলাইন ফোরামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিতে দুবাই পুলিশ কীভাবে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে তা নিয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনার সময় একটি ঘটনার উল্লেখ করে দুবাই পুলিশের শিশু ও নারী সুরক্ষা বিভাগের পরিচালক মেজর ডা. আলি মোহাম্মদ আল মাতরোশি বলেছেন, “ইন্টারপোল একবার একটি শিশুর পোস্টকে কেন্দ্র করে আমাদের সতর্ক বার্তা পাঠায়। বার্তাটি পাওয়া মাত্রই বুঝতে পারি যে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।” 

“আইপি ঠিকানা দুবাইয়েই ছিল, তবে সহযোগিতার বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ।”

তাই শিশু ও নারী সুরক্ষা বিভাগ দ্রুত অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করতে অপরাধ তদন্তের সাধারণ বিভাগের সাথে সমন্বয় করেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। কর্তৃপক্ষ শিশুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তার সাথে একটি বৈঠকের বিষয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে। 

পরবর্তীতে জানা যায়, শিশুটির মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা ছিল না, নিতান্ত রসিকতার অংশ হিসেবে তিনি ছবিটি শেয়ার করেছেন। মাতরোশি বলেন, “এই অবস্থাকে সাবধানতার সাথে মোকবিলা করতে হয়, যেন শিশুর মনের উপর কোন প্রভাব না পড়ে, একইসাথে সমস্যারও সমাধান হয়।” 

তিনি মানুষের অনলাইন কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে শিশুদের নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে এআই বিস্তারে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, এআই মানুষের ক্ষতিকারক আচরণ শনাক্ত করতে এবং প্রাথমিক ঝুঁকি মোকাবিলা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। 

ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা সংস্থাগুলো শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কীভাবে এআইকে ব্যবহার করা যায় তার উত্তর খুঁজতে এক হয়েছেন। চাইল্ড হেল্পলাইন ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক প্যাট্রিক ক্রেনস বলেন, “এআই তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, এটি একটি শিশুর কোন কাজে সাহায্য বা হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে তা নির্দেশ করার জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।” 

এই সময়ে তিনি একটি সফটওয়্যার নির্মানের বিষয়েও বলেন। তিনি বলেন, এআই কেবল মানুষের কাজকে আরও যথাযথ করতে সাহায্য করতে পারে, তবে শিশুদের যে যত্ন এবং সহানুভূতি প্রয়োজন তা কেবল মানুষের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব।

শিশুদের সুরক্ষায় এআই ব্যবহারের সম্ভাব্যতার বিষয়ে শিশু সুরক্ষা সমিতির ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোজা আল শুমিও কথা বলেন। তিনি বলেন, “এআই ব্যবহার করে, আমরা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের শনাক্ত করতে পারি।”

তিনি পিতা-মাতার মাদক আসক্তি কিংবা মানসিক সমস্যার বিশেষ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “এআই পারিবারিক তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারে এবং আমাদের সহায়তা প্রয়োজন এমন শিশুদের সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে।” 

শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিমালা প্রণয়ন এবং এর কুফল সম্পর্কে জানানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপের মধ্য দিয়ে ফোরামের আলোচনা শেষ হয়। সবশেষে মাতরোশি এআই এর কুফলগুলো সম্পর্কেও সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ প্রতিদিন/ আফছার মুন্না



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews