ময়রা কেলি তখন স্কুলে পড়েন। বয়স সাত বছর। ক্লাসে একদিন মাদার তেরেসাকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। ছোট্ট ময়রার মনে ভীষণ দাগ কাটে এই মহীয়সী নারীর কাজ। তিনিও মাদার তেরেসার মতো হতে চান। বলছিলেন, ‘সেই ছোট্ট বয়সেই বাড়ি ফিরে মাকে বলেছিলাম, বড় হয়ে আমিও একদিন এই মানুষের সঙ্গে কাজ করব।’
ছোটবেলার সেই কথা ময়রা ভোলেননি। কৈশোরজুড়ে মনের মধ্যে লালন করেছেন। ২১ বছর বয়সে স্বপ্ন সত্যি করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। নিজের শখের গাড়িটি বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে উড়াল দিলেন ভারতের কলকাতার উদ্দেশে। ময়রা বলেন, ‘সেখানে আমি সরাসরি মাদার তেরেসার সেবা সংস্থায় টানা দুই বছর কাজ করি। মাদার তেরেসার কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাই আমাকে পরে তৃষ্ণা-কৃষ্ণার মতো বিশ্বের নানা প্রান্তের অসহায় শিশুদের কাছে টেনে নিয়ে গেছে।’
কলকাতায় দুই বছর কাজ করার পর প্রায় ১৪ বছর তিনি এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছুটে বেড়িয়েছেন। বসনিয়া, আলবেনিয়া, ইরাক—যুদ্ধবিধ্বস্ত নানা দেশে গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শিশুদের সেবা করেছেন। এ কাজ করতে করতেই বুঝতে পারেন, শিশুদের উন্নত চিকিৎসা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে দেওয়া সম্ভব নয়। তখন অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গড়ে তোলেন ‘চিলড্রেন ফার্স্ট ফাউন্ডেশন’। বলছিলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম, আমার কাজটা যেন আরও গোছানো হয়, আর কোনো শিশু যেন শুধু সুযোগের অভাবে কষ্ট না পায়।’
৬১ বছর বয়সে এসেও এই শিশুদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন ময়রা।