যুদ্ধতপ্ত বিশ্বে উত্তেজনা খানিকটা কমার পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের পাশাপাশি এ সপ্তাহে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে মার্কিন শেয়ার বাজার।
এ সপ্তাহে মার্কিন শেয়ার বাজারে তৃপ্তির হাসি হাসা শীর্ষ দুটি কোম্পানি ছিল বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি বা ইভি নির্মাতা টেসলা আর চিপ জায়ান্ট কোম্পানি এনভিডিয়া।
এ সপ্তাহে টেসলা ও এনভিডিয়া’র শেয়ার যথাক্রমে ১৭ শতাংশ ও ১৬ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা কমার পাশাপাশি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরে প্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন চুক্তিও আলোচনায় এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই ৯০ দিনের জন্য শুল্ক আরোপ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ পদক্ষেপটি বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধে বড় রকমের উত্তেজনা প্রশমনেরই ইঙ্গিত, যা গত এপ্রিল থেকে অস্থিরতা তৈরি করেছিল বিশ্ব বাজারে।
এ সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় এনভিডিয়া’র সিইও জেনসেন হুয়াং ঘোষণা দিয়েছেন, সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান ‘হুমাইনে’-এর কাছে ১৮ হাজারেও বেশি এআই ব্ল্যাকওয়েল চিপ বিক্রি করবে তারা, যা ডেটা সেন্টার চালাতে ব্যবহৃত হবে।
মার্কিন মাইক্রো ডিভাইস কোম্পানি এএমডি’ও বলেছে, ‘হুমাইনে’-কে চিপ সরবরাহ করবে তারা। এমন খবরে এএমডি’র শেয়ার সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। ‘পালান্টির’ ও তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং-এর শেয়ারও বেড়েছে ১০ শতাংশেরও বেশি।
ট্রাম্পের এ সৌদি সফরে ছিলেন টেসলার সিইও ইলন মাস্কও। তিনি বলেছেন, তার কোম্পানি স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা এভিয়েশন ও জাহাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটিতে রোবোট্যাক্সি আনার পরিকল্পনাও করছেন তিনি।
সিএনবিসি প্রতিবেদনে লিখেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইনির্ভর এক বিশাল আকারের ক্যাম্পাস গঠনের ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এ প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের যে কয়টি কোম্পানির সঙ্গে পার্টনারশিপ থাকবে, তার মধ্যে রয়েছে এনভিডিয়াও।
অনেক কোম্পানির মতো এনভিডিয়াকেও চীনে নিজেদের এআই চিপ পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুমতি নিতে হয়। ২০২২ সালে জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগকে কারণ দেখিয়ে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কঠোর করতে শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
গত মাসে এনভিডিয়া ঘোষণা করেছিল, চীনে ‘এইচ২০ জিপিইউ’ নামের চিপ রপ্তানির জন্য সাড়ে পাঁচশ কোটি ডলার খরচ হবে। আর চীন যুক্তরাষ্ট্রের এ চিপ জায়ান্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার।
হুয়াং বলেছেন, চীনের এআই বাজার আগামী দুই থেকে তিন বছরে পাঁচ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে। আর এ বাজার হাতছাড়া হলে তা হবে কোম্পানিটির জন্য ‘বিশাল এক ক্ষতি।’