গুডবাই জার্মান ‘স্নাইপার’

ঠিক ১৮ বছর আগের দিনটা যেন শনিবার ফিরে এলো সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। ২০০৬ সালের কথাই বলি; তখন রিয়াল মাদ্রিদে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামেন জিনেদিন জিদান। লস ব্লাঙ্কোসদের কাছে জিজু তখন ভালোবাসার আরেক নাম। তাঁর বিদায়ে সেদিন পুরো মাদ্রিদে নেমেছিল বিষাদের ছায়া। দৃশ্যটা নতুন করে আবার নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। ৭০ কি ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ, বার্নাব্যুর সাউথ স্ট্যান্ডে একাকী মন খারাপ করে বসে আছেন, তাঁর পেছনে সাদা একটা ব্যানারে কালো কালিতে লেখা, ‘রেফারি প্লিজ বিদায়ী বাঁশিটা দেবেন না আজ। না হলে জিজু আমাদের ছেড়ে চলে যাবে।’ 

ঠিকই একই লেখা ভিন্নভাবে দেখা গেল ১৮ বছর পর সেই বার্নাব্যুর গ্যালারিতে। এবার এক খুদে সমর্থক এমনি এক প্ল্যাকার্ড হাতে হাজির হয়। যেখানে সবকিছুই আগের মতো লেখা, কেবল জিদানের জায়গায় টনি ক্রুজের নাম।

একেই বলে রিয়াল মাদ্রিদ, যারা কিনা মনেপ্রাণে তাদের তারকাদের আগলে রাখে, ভালোবাসে, সম্মান দেয়। যে কাজটা শেষদিন পর্যন্ত দেখা যায়। সে জন্যই বোধ হয় রিয়ালে আসার পর কেউই এই ক্লাব ছেড়ে যেতে চান না। গেলেও চোখের জলে বিদায় নিতে হয় তাদের। যেমনটা ক্রুসের বেলায় হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এই ক্লাবটির সঙ্গে আছেন। রিয়ালের মাঝমাঠের সবচেয়ে নিখুঁত সেনানী তিনি। যার আরেক নাম পাসিং মাস্টার। পরিসংখ্যানও সেই কথা বলবে। ১০ মৌসুম কাটিয়েছেন, যেখানে তাঁর পাসিং একুরেসি অন্তত ৯২ শতাংশ। সব শেষ ২০২৩-২৪ মৌসুমে ২ হাজার ৩৬৮ বার বল পাস দিয়েছেন ক্রুজ, যেখানে ৯৫ শতাংশ পাসই ছিল পারফেক্ট। বুঝতেই পারছেন, কেন তাঁকে এই পাসের মাস্টার বলা হয়। এমন একজন কিংবদন্তিকে ছাড়া নতুন করেই ভাবতে হবে রিয়ালকে। তবে চিরকাল কেউ থাকেন না, এটাও ঠিক।

ক্রুস চাইলে আরেকটা মৌসুম মাদ্রিদে কাটিয়ে দিতে পারতেন কিন্তু তিনি বেছে নেন বিদায়কে। শোনেন হৃদয়ের কথা। শনিবার রাতে হয়তো বেতিসের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে রিয়াল। কিন্তু ম্যাচের ফলাফলে কী বা আসে যায়। দিনটি যে ক্রুসেরই। এমন একজন মাস্টারক্লাস মিডফিল্ডারকে বিদায় দিতে মাদ্রিদের সমর্থকদেরও বুক কেঁপেছিল। আর ক্রুস তো হয়ে যান আরও আবেগি, যেখানে এতটা বছর কাটিয়েছেন। যে ক্লাবের সঙ্গে তাঁর আত্মার সম্পর্ক। সেই ক্লাবকে বিদায় বলাটা যে মোটেও সহজ ছিল না, সেটা তিনি এক বার্তায়ও জানিয়ে দেন। 

অবশ্য লা লিগা আর ঘরের মাঠ থেকে বিদায় নিলেও শেষ ম্যাচ এখনও বাকি। শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল দিয়েই ইতি হবে তাঁর মাদ্রিদ অধ্যায়ের। তবু ঘরের মাঠের বিদায়টাই বেশি পুড়িয়েছে ক্রুসকে। এই বিদায়টা যেন মানতে পারেনি তাঁর ছেলেমেয়েরাও। তাদেরও মন ভেঙেছে। তাই তো রেফারির ওই শেষ বাঁশিতে ক্রুসের ছোট্ট ছেলেটিও কেঁদে বুক ভাসান। তাদের সান্ত্বনা দিতে হাজির হন ক্রুস। ততক্ষণে মনের অজান্তে তাঁরও চোখে আসে জল। আসলে বিদায় এমনি, নিষ্ঠুর, নির্দয়, নিদারুণ। বিদায় সবাইকে কাঁদায়, সবাই কাঁদে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews