দীর্ঘ তিন মাস পর আজ বুধবার বিকেলে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দেশে ফেরার পর তিনি গ্রেপ্তার হন কি না, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা উৎকণ্ঠা আছে বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে ঢাকা ও কুমিল্লার আদালত থেকে পাঁচটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, তাঁর দেশে ফেরার আগমুহূর্তে হঠাৎ করে নিম্ন আদালত থেকে এই পরোয়ানা জারির পেছনে সরকারের হাত আছে।
এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। খালেদা জিয়া দেশে ফিরলে তাঁর জন্যও আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তখন পর্যন্ত তাঁর থানায় পৌঁছায়নি।
বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, তাঁরা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টিকে সেভাবে আমলে নিচ্ছেন না। এই পরোয়ানা জারির পেছনে সরকারের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি ও অসৎ উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করেন তাঁরা।
তবে এ বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত শনিবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকা (দুটি মামলা) মামলায় পরোয়ানা জারির পেছনে একটা জিনিস পরিষ্কার যে সরকার খুব দ্রুত মামলাটা নিষ্পত্তি করতে চায়। তারা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধান বিরোধীদলীয় নেতাকে সাজা দিতে চায়।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, সরকার খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের মতো ভুল করবে না। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশে আসবেন। তা ছাড়া এসব বিষয়ে (গ্রেপ্তার) তিনি কখনো ভয় করেননি।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি, রাজনৈতিক প্রভাবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা ইস্যু হয়েছে, যা কোর্ট না করলেও পারতেন। খালেদা জিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে সঙ্গে সঙ্গে পরোয়ানা বাতিল হয়ে যাবে।’
খালেদা জিয়া গত ১৫ জুলাই যুক্তরাজ্যে যান। প্রায় তিন মাস তিনি সেখানে সপরিবার থাকা বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন। এ সময় তিনি নিজের চোখ ও পায়ের চিকিৎসা নেন বলে দলের নেতারা জানান।