তীব্র তাপদাহে যেন সারাদেশ পুড়ছে। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ উপরের দিকে উঠছে। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে, ফসলের মাঠে। কৃষকরা বলছেন, তীব্র তাপদাহে বার বার পানি দিয়েও মাটি গরম হয়ে শুকিয়ে মরছে সবজির চারা। সেচের জন্য তুলনামূলক প্রয়োজনীয় পানিও মিলছে না গভীর নলকূপে। এতে করে সবজির চারা নিয়ে চিন্তায় বগুড়ার শেরপুরের সীমাবড়ী ইউনিয়নের বৈটখর ও গাড়ীদহ ইউনিয়নের রানীনগর এলাকার সবজি চারা গ্রাম নামে পরিচিত চারা ব্যবসায়ীরা।

প্রতি বছর এই উপজেলার দু’টি গ্রামের উৎপাদিত চারা প্রায় ২ কোটি টাকা বিক্রয় করা হলেও তীব্র তাপদাহে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় চারা মরে গিয়ে অর্ধেকে নেমে আসার উপক্রম হয়েছে। এতে চারা উপযুক্ত করতে না পারায় কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে চারা চাষীদের।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, তীব্র তাপদাহে থেকে রক্ষা পেতে বীজতলা পলেথিন দিয়ে মোড়ানোসহ বিশেষ পরিচর্যার মাধ্যেমে বীজ রোপন করে উপযুক্ত চারা তৈরী করেও বিক্রয় করতে পারছে না। তীব্র তাপদাহে চারা লাগালেও মাটি অতিরিক্ত গরম হওয়াতে চারাগাছ মরে যাচ্ছে। যারা উৎপাদন করছে তাদেরও চারা বের হওয়া মাত্রই অতিরিক্ত গরমে চারার মাথা মরে যাচ্ছে। এতে চারা উপযুক্তকারী ও রোপনকারী দু’জনই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ সময় কথা হয় গাড়ীদহ ইউনিয়নের চারা চাষী ওয়াহেদ আলীর সাথে, তিনি জানান, ‘উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের বেগুন, মরিচ, টমেটো, ফুলকপির চারা আর মাত্র ৩৫ দিনের মধ্যে বিক্রয়ের উপযুক্ত হতো। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপদাহের কারণে সেই চারা মরে আমার প্রায় ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আমি জমিতে চুন ছিটিয়ে চাষ করে আবার বৃষ্টির অপেক্ষায় রেখে দিয়েছি। বৃষ্টি হওয়ার পরে চারা রোপণ করব। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত চারা তৈরী করা সম্ভব হবে না।’

এছাড়াও বেটখৈর এলাকার বাবলু মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, মুঞ্জুল হোসেন, খালেক ও রানীনগর গ্রামের (বীজ রোপণ) চাষী শরিফ উদ্দিন মিন্টুর সাথে কথা হয়। তারা জানান, ‘নিজস্ব প্রযুক্তি, পরিচর্যা, সার ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগে এ চারা তৈরী করি। এ চারা পাঁচ মাস পর্যন্ত বিক্রয় হয়। এই পাঁচ মাসে তিন থেকে চার বার চারা তৈরী করা যায়। আগাম সবজি চাষের চারা তৈরী এবার তৈরী করেছিলাম সেটা তীব্র তাপদাহে মরে গেছে। এবার আবহাওয়া বর্তমানে অনুকূলে নেই। এজন্য বর্তমানে চারার উৎপাদন ও চাহিদা কম।’

নিফা নার্সারীর চাষী (বীজ রোপন) রোহান জানান, ‘বিজলী মরিচ ও লিডার কপি এবং টমেটোর চারা খুব ভালো। তাই বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে আমাদের চারা সংগ্রহ করে। চারা মরে যাওয়ায় এবার আগাম জাতের সবজি বাজারে তেমন দেখা যাবে না।’

শেরপুর উপজলো কৃষি অফিসার ফারজানা আক্তার জানান, ‘এই উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে বীজ চারা তৈরী হয়। এই মৌসুমে ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তীব্র তাপদাহে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাতে পৌঁছাতে পারবে কি-না সন্দেহ আছে। তবে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষীদের সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে আশা করি, তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews