রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

নিউজ আপলোড : ঢাকা , শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২০

নিজ দেশ মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দিন দিন গভীর হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মায়ানমার সরকার এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন উদ্যোগ নেয়নি। বাংলাদেশ কয়েক দফায় মায়ানমার সরকারের কাছে বেশ কয়েক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে। দেশটি এখনও সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করে চলেছে। তাদের তালিকা যাচাইয়ের কাজ শেষ হচ্ছে না। রাখাইনের পরিবেশ ঠিক হচ্ছে না। বরং রাখাইনে আরও যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সীমান্তে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সময়ের কর্মকান্ড নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এসবের কোনটিই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য কোন শুভ ইঙ্গিত বহন করে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিলম্ব হওয়া নিয়ে গতকাল সংবাদ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় প্রচন্ড চাপ তৈরি করেছে। এক শ্রেণীর রোহিঙ্গার নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। এখানে তাদের দীর্ঘ উপস্থিতি সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এক সময় এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এ অঞ্চলের আর কোন দেশের মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের বন্ধু বলে পরিচিত প্রভাবশালী দেশগুলো রোহিঙ্গা ইস্যুতে মূলত মায়ানমারকেই নীরব সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণেই মায়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। চীন ও ভারত দুই বৃহৎ শক্তি মায়ানমারে তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে উল্লিখিত দুই দেশকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে আশ্বাস ছাড়া আর কিছুরই দেখা মেলেনি। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার টেলিফোনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে সেই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে চীনের আশ্বাসকে মূল্যহীন ভাবা এখনই ঠিক হবে না বলে আমরা মনে করি। যে আশ্বাস মিলছে সেটাও একটা প্রাপ্তি। চীন-ভারত এখন অন্তত প্রকাশ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা বলছে। এ বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দক্ষ ও কৌশলী কূটনীতি নিশ্চিত করা গেলে উল্লিখিত দুই দেশকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে সক্রিয় করা সম্ভব হতে পারে। চীন ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে। এটাকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাতে হবে। মনে রাখতে হবে, এটি একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনীতিও সম্পৃক্ত আছে। বাস্তবতা হচ্ছে, চীন ভূমিকা রাখতে চাইলে বিশ্বের অনেক দেশই রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজেদের বর্তমান অবস্থান বদলাতে চাইতে পারে। আবার এর বিপরীতটাও সত্য। কাজেই দেখে-শুনে-বুঝে সরকারকে একটি পদক্ষেপ নিতে হবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews