সুন্নতে খৎনা উপলক্ষে আয়োজিত ‘হলুদ সন্ধ্যা’ অনুষ্ঠানের নাচ-গান দেখতে যেয়ে দু’দল উঠতি বয়সী কিশোরের মাঝে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। গভীর রাতে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষের উপর হামলা চালায়।

প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষকালে তিনটি বাড়িতে হামলা-লুটপাট ও মালামাল ভাঙচুর ছাড়াও দু’টি গরু লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি ইউনিয়নের গোপীনাথপুর ও ছোট হামিরদি গ্রামের দু’দলের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শেষ রাতের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, উপজেলার হামিরদি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে ইমরান মুন্সির ছেলে ঈসা মুন্সির সুন্নতে খৎনা উপলক্ষে সোমবার (৯ জুন) দুপুরে বাড়ির পাশে গোপীনাথপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠে গরু জবাই করে কয়েক হাজার অতিথি আপ্যায়নের আয়োজন চলছিলো। রোববার সন্ধ্যার পরে ওই স্কুল মাঠে ঈসা মুন্সির ‘হলুদ সন্ধ্যা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সাউন্ডবক্সে উচ্চশব্দ বাজিয়ে মঞ্চে চলছিল ভাড়া করে আনা শিল্পীদের নাচ-গান। ওই নাচ-গান দেখতে সেখানে পাশের গ্রাম ছোট হামিরদির কিছু কিশোর-তরুণ সেখানে জড়ো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টার দিকে অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে দর্শকসারির একপাশে অবস্থানরত ছোট হামিরদি গ্রামের নয়ন, হৃদয় ও নিরবের সাথে গোপীনাথপুর গ্রামের সোহেল, সাগর ও সাজ্জাদের মাঝে জোরে জোরে গান বাজানো নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। কিছু সময়ের মধ্যেই তাদের মাঝে হাতাহাতি থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে। এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে ছোট হামিরদি গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গোপীনাথপুর গ্রামে হামলা করে। এরপর লাঠিসোটা ও ঢাল, সড়কি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। স্কুল মাঠ থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে আগত অতিথিসহ বাড়ির নারী-পুরুষদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ তারা নিরাপত্তাহীন হয়ে জীবন ঝুঁকিতে নিরাপদে পালিয়ে রক্ষা পায় তারা।

দুই ঘন্টাব্যাপী মারামারিতে উভয় পক্ষের ২৫ জনের মতো আহত হয়। তাদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এব্যাপারে ইমরান মুন্সি অভিযোগ করে বলেন, ‘ছোট হামিরদি ও গোপীনাথপুর গ্রামের মধ্যে দীর্ঘদিনের কোন্দলের জের ধরে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: সাজ্জাদ হোসেন লিটন মাতুব্বরের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে আকস্মিক হামলা চালিয়ে তিনটি বাড়িঘর ও ডেকোরেটরের মালামাল ভাংচুর করে এবং দুটি গরু ও মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।’

তবে এ ব্যাপারে বিএনপির নেতা লিটন মাতুব্বরের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে অপর একজন ফোনটি রিসিভ করলেও কিছু বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘দুই গ্রামের লোকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। দু’তিনটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

তিনি জানান, এ ঘটনায় দুপুর পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews