'আমি একজন ইউপি চেয়ারম্যান। সমাজে আমার মানসম্মান আছে। ব্যাগে এমন কিছু নেই, যে জন্য আপনারা তল্লাশি করবেন। সার্চ ওয়ারেন্ট আছে? সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়া একজন চেয়ারম্যানকে এভাবে হয়রানি করতে পারেন না। আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছি। কেউ তল্লাশি করা দেখে ফেললে মানসম্মান যাবে। আমাকে যেতে দিন।'

মাদকবিরোধী আভিযানিক দলের কাছে এভাবে চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করেছিলেন ৬২ বছরের নুরুল হক। কিন্তু নাছোড়বান্দা আভিযানিক দলের লোকজন। কারণ তারা নিশ্চিত- এই ব্যক্তির ব্যাগে আছে ইয়াবার চালান। পাতলা কাপড়ের শপিং ব্যাগ তল্লাশি করামাত্র বেরিয়ে আসে চার হাজার ইয়াবা। তার সঙ্গে থাকা দুই সহযোগীর কাছে পাওয়া যায় আরও ছয় হাজার।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী মসজিদ মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটে। অভিযানটি চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগর উপ-অঞ্চলের মতিঝিল সার্কেল।
ইয়াবা কারবারি নুরুল হকের বাড়ি কাশিনগর ইউনিয়নের নিলক্ষ্মী বিষ্ণপুর গ্রামে। তবে আদৌ ইউপি চেয়ারম্যান নন তিনি। অবশ্য ২০০৩ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার কাশিনগর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। এর পর থেকে এলাকার বাইরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আড়াল করতে নিজেকে সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। মঙ্গলবারও একইভাবে পার পাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমে নিজেকে চেয়ারম্যান দাবি করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, কাশিনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। কিন্তু এটিও ভুয়া।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও কাশিনগরের বিভিন্ন সূত্র জানায়, নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করলেও সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকেছেন। কাঁচপুর, চিটাগাং রোড, শ্যামপুরের ফরিদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, বনশ্রী ও রামপুরায় মাদক কারবারিদের কাছে ইয়াবা পাইকারি বিক্রি করেন তিনি। কারও মাধ্যমে নয়, তিনি নিজেই কুমিল্লা থেকে ঢাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবার চালান পৌঁছে দিতেন। সঙ্গে থাকত দু'জন সহযোগী।

ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর তা সরবরাহ করতেন নুরুল হক। পরিপাটি ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় সহজে কেউ সন্দেহ করত না তাকে। গ্রেপ্তার এড়িয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় ইয়াবা আনতে কমপক্ষে ছয়বার গাড়ি বদল করতেন তিনি। প্রতি মাসে অন্তত ১২টি চালান নিয়ে আসতেন ঢাকায়। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায়ই ফিরে যেতেন ঢাকা থেকে।
মাস খানেক ধরে নুরুল হককে হাতেনাতে ধরার চেষ্টা করে আসছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কিন্তু রাস্তায় গাড়ি পরিবর্তন করে কৌশলে ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দিয়ে চলে যেতেন তিনি। মঙ্গলবার ইয়াবার চালান নিয়ে নুরুল ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী আসবেন- এটি নিশ্চিত হন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগর উপ-অঞ্চলের মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক সুমনুর রহমান। এর পরই তার নেতৃত্বে দক্ষিণ বনশ্রীতে ওত পেতে থাকে আভিযানিক দল।

দুপুর আড়াইটার দিকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা থেকে নেমে মসজিদ মার্কেটের সামনে দাঁড়ান নুরুল হক। পাশে তার দুই সহযোগী আরিফুল ইসলাম (২৫) ও সফিউল্লাহ ওরফে সাদ্দাম (২৮)। তাদের বাড়িও কুমিল্লা জেলায়। তিনজনকে গ্রেপ্তার ও তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এই ১০ হাজার পিস ইয়াবা বনশ্রী ও রামপুরায় তিন পাইকারি ব্যবসায়ীকে সরবরাহ করার কথা ছিল। এর আগে ১৫ হাজার পিস ইয়াবা চিটাগাং রোড থেকে কয়েকজনের কাছে বিক্রি করেন। ওই ক্রেতাদের মধ্যে একজনের বাড়ি চেনেন বলে আভিযানিক দলকে জানিয়েছেন নুরুলরা। তাদের দেওয়া তথ্যমতে শ্যামপুরের ফরিদাবাদে আফসানার বাড়ি অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৬০০ পিস জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আফসানাকে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চিটাগাং রোড থেকে নুরুল হকের কাছ থেকে তিন হাজার পিস ইয়াবা সংগ্রহ করেন আফসানা। অভিযান চালানোর আগেই এক হাজার ৪০০ পিস বিক্রি করে ফেলেন তিনি।

মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক সুমনুর রহমান বলেন, নুরুল হক ইয়াবার বড় কারবারি। তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা কাশিনগরে ইয়াবা মজুদ করেন। এরপর নুরুল নিজেই ইয়াবার চালান ঢাকায় এনে পাইকারি বিক্রি করেন। রাস্তায় একাধিকবার গাড়ি বদল করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে কাশিনগর ইউনিয়নের সোয়াগাজী থেকে নুরুল ও তার দুই সহযোগী হিউম্যান হলারে কদুয়ার বাজারে আসেন। সেখান থেকে ভাড়া মাইক্রোবাসে আসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। এরপর ওঠেন লোকাল বাসে। নামেন কুমিল্লা গৌরীপুরে। মাঝখানে আরেকটি বাস পরিবর্তন করেন। পরে অপর একটি লোকাল বাসে আসেন চিটাগাং রোডে। সেখানে কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে ইয়াবা সরবরাহের পর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বনশ্রী আসেন তারা। সুমনুর রহমান বলেন, নুরুল হক সিন্ডিকেটের সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

'আমি একজন ইউপি চেয়ারম্যান। সমাজে আমার মানসম্মান আছে। ব্যাগে এমন কিছু নেই, যে জন্য আপনারা তল্লাশি করবেন। সার্চ ওয়ারেন্ট আছে? সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়া একজন চেয়ারম্যানকে এভাবে হয়রানি করতে পারেন না। আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছি। কেউ তল্লাশি করা দেখে ফেললে মানসম্মান যাবে। আমাকে যেতে দিন।'মাদকবিরোধী আভিযানিক দলের কাছে এভাবে চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করেছিলেন ৬২ বছরের নুরুল হক। কিন্তু নাছোড়বান্দা আভিযানিক দলের লোকজন। কারণ তারা নিশ্চিত- এই ব্যক্তির ব্যাগে আছে ইয়াবার চালান। পাতলা কাপড়ের শপিং ব্যাগ তল্লাশি করামাত্র বেরিয়ে আসে চার হাজার ইয়াবা। তার সঙ্গে থাকা দুই সহযোগীর কাছে পাওয়া যায় আরও ছয় হাজার।গত মঙ্গলবার রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী মসজিদ মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটে। অভিযানটি চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগর উপ-অঞ্চলের মতিঝিল সার্কেল।ইয়াবা কারবারি নুরুল হকের বাড়ি কাশিনগর ইউনিয়নের নিলক্ষ্মী বিষ্ণপুর গ্রামে। তবে আদৌ ইউপি চেয়ারম্যান নন তিনি। অবশ্য ২০০৩ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার কাশিনগর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। এর পর থেকে এলাকার বাইরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আড়াল করতে নিজেকে সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। মঙ্গলবারও একইভাবে পার পাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমে নিজেকে চেয়ারম্যান দাবি করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, কাশিনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। কিন্তু এটিও ভুয়া।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও কাশিনগরের বিভিন্ন সূত্র জানায়, নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করলেও সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকেছেন। কাঁচপুর, চিটাগাং রোড, শ্যামপুরের ফরিদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, বনশ্রী ও রামপুরায় মাদক কারবারিদের কাছে ইয়াবা পাইকারি বিক্রি করেন তিনি। কারও মাধ্যমে নয়, তিনি নিজেই কুমিল্লা থেকে ঢাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবার চালান পৌঁছে দিতেন। সঙ্গে থাকত দু'জন সহযোগী।ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর তা সরবরাহ করতেন নুরুল হক। পরিপাটি ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় সহজে কেউ সন্দেহ করত না তাকে। গ্রেপ্তার এড়িয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় ইয়াবা আনতে কমপক্ষে ছয়বার গাড়ি বদল করতেন তিনি। প্রতি মাসে অন্তত ১২টি চালান নিয়ে আসতেন ঢাকায়। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায়ই ফিরে যেতেন ঢাকা থেকে।মাস খানেক ধরে নুরুল হককে হাতেনাতে ধরার চেষ্টা করে আসছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কিন্তু রাস্তায় গাড়ি পরিবর্তন করে কৌশলে ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দিয়ে চলে যেতেন তিনি। মঙ্গলবার ইয়াবার চালান নিয়ে নুরুল ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী আসবেন- এটি নিশ্চিত হন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগর উপ-অঞ্চলের মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক সুমনুর রহমান। এর পরই তার নেতৃত্বে দক্ষিণ বনশ্রীতে ওত পেতে থাকে আভিযানিক দল।দুপুর আড়াইটার দিকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা থেকে নেমে মসজিদ মার্কেটের সামনে দাঁড়ান নুরুল হক। পাশে তার দুই সহযোগী আরিফুল ইসলাম (২৫) ও সফিউল্লাহ ওরফে সাদ্দাম (২৮)। তাদের বাড়িও কুমিল্লা জেলায়। তিনজনকে গ্রেপ্তার ও তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এই ১০ হাজার পিস ইয়াবা বনশ্রী ও রামপুরায় তিন পাইকারি ব্যবসায়ীকে সরবরাহ করার কথা ছিল। এর আগে ১৫ হাজার পিস ইয়াবা চিটাগাং রোড থেকে কয়েকজনের কাছে বিক্রি করেন। ওই ক্রেতাদের মধ্যে একজনের বাড়ি চেনেন বলে আভিযানিক দলকে জানিয়েছেন নুরুলরা। তাদের দেওয়া তথ্যমতে শ্যামপুরের ফরিদাবাদে আফসানার বাড়ি অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৬০০ পিস জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আফসানাকে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চিটাগাং রোড থেকে নুরুল হকের কাছ থেকে তিন হাজার পিস ইয়াবা সংগ্রহ করেন আফসানা। অভিযান চালানোর আগেই এক হাজার ৪০০ পিস বিক্রি করে ফেলেন তিনি।মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক সুমনুর রহমান বলেন, নুরুল হক ইয়াবার বড় কারবারি। তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা কাশিনগরে ইয়াবা মজুদ করেন। এরপর নুরুল নিজেই ইয়াবার চালান ঢাকায় এনে পাইকারি বিক্রি করেন। রাস্তায় একাধিকবার গাড়ি বদল করেন।জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে কাশিনগর ইউনিয়নের সোয়াগাজী থেকে নুরুল ও তার দুই সহযোগী হিউম্যান হলারে কদুয়ার বাজারে আসেন। সেখান থেকে ভাড়া মাইক্রোবাসে আসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। এরপর ওঠেন লোকাল বাসে। নামেন কুমিল্লা গৌরীপুরে। মাঝখানে আরেকটি বাস পরিবর্তন করেন। পরে অপর একটি লোকাল বাসে আসেন চিটাগাং রোডে। সেখানে কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে ইয়াবা সরবরাহের পর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বনশ্রী আসেন তারা। সুমনুর রহমান বলেন, নুরুল হক সিন্ডিকেটের সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews